রাঙামাটি প্রতিবেদক: রাঙামাটি শহরে সন্তোষজনক ভোট হলেও ঘন্টায় দুর্গম এলাকায় তেমন ভোট পড়েনি ! শুকুছড়ি ও সাপছড়িতে বিছিন্ন ঘটনায় ভোট বন্ধ থাকায় ঘন্টা খানেক পর স্বাভাবিক হয়েছে।
রোববার দুপুর ১২টা। রাঙামাটি সদর উপজেলার কুতুকছড়ি বড়মহাপুরম উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সুনশান নীরবতা। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ৪ ঘন্টায় ভোট পড়েছে মাত্র দুইটি; তাও দিয়েছেন নৌকার প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট। এই কেন্দ্রটিতে চার ভোটকক্ষ থাকলেও দুইটিতে পোলিং এজেন্ট দিয়েছে নৌকার প্রার্থী। সেই দুজনই দিয়েছেন ভোট।
শুকুরছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০৫৮ ভোট মধ্যে দুপুর ১টায় ভোট পড়েছে ২৫০ টি । প্রিসাডিং অফিসার মো: ইমদাদ রনি জানায়, এক প্রতিবন্ধী জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে আটক করলে ভোট বন্ধ করে দেয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। পরে প্রতিবন্ধীকে ছেড়ে দিলে ভোট আবার শুরু হয়। সাপছড়ি বিদ্যালয়ে ভোট শুরুতে ইউপিডিএফ ভোট দিতে আসা লোকদের হুমকি দিয়ে বর্জনের ঘোষনা দেয়। পরে পুলিশ ও নির্বাচনী মনিটরিং টিম আসলে স্বাভাবিক হয়। সাপছড়ি প্রিসাডিং অফিসার মো: আজাহার হোসেন জানান, সাপছড়ি ভোটের সংখ্যা ২৭৮৬ তার মধ্যে এক ঘটিকা পর্যন্ত ১০৩৫ ভোট প্রদান করে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,বাইরে কি হয়েছে আমার জানা নেই ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুতুকছড়ি বড়মহাপুরম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৬৩০। তবে ৪ ঘন্টায় ভোট পড়েছে দুইটি। তবে দুপুরের পর থেকে ভোটাররা উপস্থিত হতে পারেন বলে আশাবাদী তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্র হাজাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ বেলা ১১টায় এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৩টি। যদিও কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৯১৬ জন। এই কেন্দ্রের নির্বাচন কর্মীরাও বসে আছেন কখন একজন ভোটার দিতে আসবেন।
একই উপজেলার আরেকটি ভোটকেন্দ্র ঘিলাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঘিলাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়। বেলা ১১টা ১৯ মিনিটে ভোটকেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে ৩৭টি। কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার দীগন্ত চাকমা জানান, কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৪৩২ জন। তিনি জানান, আমাদের বলা হয়েছিল দুই ঘন্টা পরপর ভোটের আপডেট জানাবে। কিন্তু অ্যাপটিতে ঢুকতে পারছি না।
রাঙামাটি সদর উপজেলার আরেকটি ভোটকেন্দ্র দক্ষিণ কুতুকছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৮ জন। তবে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১০২টি। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সুফল চাকমা জানান, আমরা ভোটারদের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু ভোটারের উপস্থিত তেমন দেখা যাচ্ছে না।
মূলত পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফের ভোট বর্জনের কারণে ইউপিডিএফ অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ভোটার উপস্থিতির দেখা মিলছেনা। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্রে না আসতে বাধ্য করেছে ইউপিডিএফ।
২৯৯ নম্বর রাঙামাটি আসনটিতে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দীপংকর তালুকদার, তৃণমূল বিএনপির মনোনীত সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মনোনীত ছড়ি (লাঠি) প্রতীকের প্রার্থী নেতা অমর কুমার দে।
জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৫৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৩৬, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ৩১৬ এবং হিজড়া ভোটার রয়েছেন দুইজন।