নিজস্ব প্রতিনিধি: দুটি পৃথক ঘটনায় পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) ছয় কর্মী নিহতের পর এবার রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে একই সংগঠনের দুইজন গুলিতে মারা গেছেন।রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালং বাজার ব্রিজপাড়ায় এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আশীষ চাকমা ও দীপায়ন চাকমা নামে ইউপিডিএফের দুজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা।ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল জানান, ‘ইউপিডিএফ প্রসিত দলের দুজন গুলিতে মারা গেছেন। আমি ঘটনাস্থলে আছি।’ নিহতের খবর নিশ্চিত করে ইউপিডিএফ মুখপাত্র অংগ্য মারমা বলেন, ‘মাচালংয়ে আমাদের পার্টির দুইজন সদস্য মারা গেছেন। নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিতভাবে জানতে পারিনি। আমরা বিবৃতিতে ঘটনা তুলে ধরব।’ রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানিয়েছেন, ‘বাঘাইছড়ির মাচালং এলাকায় নিহতের খবর শুনেছি। কেউ বলছে একজন, কেউ বলছে দুজন। তবে আমরা এখনও এটি নিশ্চিত হতে পারিনি।’ তবে এলাকায় চরম আতংক বিরাজ করছে । এই ঘটনায় ইউপিডিএফ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিবৃতি জানিয়েছেন। প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা জেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচলঙে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, আজ দুপুর ১২টার সময় জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাজেক ইউনিয়নের মাচলং ব্রিজ পাড়ায় একটি দোকানে এসে অতর্কিতভাবে ইউপিডিএফের দুই সদস্যের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়।সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলে দীপায়ন চাকমা (৩৮) ও আশুক্য চাকমা ওরফে আশীষ (৪৫) নামে দুই ইউপিডিএফ সদস্য নিহত হন।নিহত দীপায়ন চাকমা ৩৬ নং সাজেক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের এগুজ্জেছড়ি গ্রামের মৃত অনিল বরণ চাকমার ছেলে, আর আশুক্য চাকমা ৩৪ নং রূপকারী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মোরঘোনা গ্রামের মৃত শান্তি কুমার চাকমার ছেলে।বিবৃতিতে ইউপিডিএফ নেতা এই হত্যার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক আখ্যায়িত করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে ইউপিডিএফের চলমান আন্দোলন বানচাল করে দেয়ার লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠি পরিকল্পিতভাবে সন্তু গ্রুপসহ ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে প্রতিনিয়ত ইউপিডএফ নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে।বিবৃতিতে তিনি নেতা-কর্মী খুন করে ও দমন-পীড়ন চালিয়ে ইউপিডিএফের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যাবে না মন্তব্য করে বলেন, শাসকগোষ্ঠির খপ্পড়ে পড়ে সন্তু লারমা আবারো খুনের নেশায় মেতে উঠেছেন। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিকামী জনতা তার এই জুম্ম ধ্বংসের কার্যকলাপ রুখে দেবে।বিবৃতিতে সচল চাকমা অবিলম্বে মাচলঙে দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।