নিজস্ব প্রতিবেদক: গত আগষ্ট মাসের ৮ তারিখে এমাজন পাব্লিশিং (এপাব) অধিনে ওডিসি গ্লোবাল ফাউন্ডেশন ফর আর্টস এন্ড কালচার প্রকাশ করলো বাংলাদেশের আবৃত্তিশিল্পী সামিউল ইসলাম পোলাক এর আত্মজীবনীমূলক কফি টেবিল বুক “থার্টি থ্রি সামার “।
সামিউল ইসলাম পোলাক বলেন, আমার জন্মদিনে, হঠাৎ করেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই কালজয়ী কবিতাটি মনে পড়ল, “কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি” আমি সেদিন তেত্রিশ বছরের হয়েছিলাম।ভাবলাম আমার অনুভুতিগুলোকে কাগজে লিখে রাপরক্ষণেই মনে হলো একটা আত্মজীবনী লিখি।রবীন্দ্রনাথের অটোবায়োগ্রাফি “জীবনস্মৃতি’ গোটা টা পরে নিলাম।তার শুরুতেই গুরুদেব লিখেছেন, “স্মৃতির পটে জীবনের ছবি কে আঁকিয়া যায় জানি না।কিন্তু যেই আঁকুক সে ছবিই আঁকে।অর্থাৎ যাহাকিছু ঘটিতেছে, তাহার অবিকল নকল রাখিবার জন্য সে তুলি হাতে বসিয়া নাই।সে আপনার অভিরুচি-অনুসারে কত কী বাদ দেয়, কত কী রাখে।কত বড়োকে ছোটো করে, ছোটোকে বড়ো করিয়া তোলে।সে আগের জিনিসকে পাছে ও পাছের জিনিসকে আগে সাজাইতে কিছুমাত্র দ্বিধা করে না।বস্তুত তাহার কাজই ছবি আঁকা, ইতিহাস লেখা নয়।” সেই বোধ হলো, একটা সচিত্র বই করি।শুরু হলো অন্বেষন, বাড়ির পুরানো এলবাম আর আমার পার্সোনাল কম্পিউটার থেকে ছবি গুলো সংগ্রহ করে, লিখতে শুরু করলাম।এই বইটি আমার জীবনের নির্বাচিত স্মৃতির একটি সচিত্রভ্রমণ।বইটি মূলত হারানো বসন্তগুলিকে নতুন করে ফিরে দেখা।এখানে আমার বাবা মা আছেন, আমার দাদী নানী আছেন, আমার মুমু আছে, স্বপ্নীল আছে, আমার স্কুল আছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আছে, লতা মঙ্গেশকার আছে, পাকিজা আছে আর সবার সাথে মিলে মিশে আছে আমার শিল্পীসত্তা।আমি ফরিদপুরের একটা সাধারণ ছেলে ছিলাম, আমার শ্রোতাজনেরা, আমার দেশ ও ভারত আমাকে শিল্পী সিংহাসনে বসিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ, তাই সেই স্মৃতিগুলিকে ছাপিয়ে রাখা। আমি এখানে আমার গল্পের পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত কিছু দর্শন ও শেয়ার করিছি। আমি এমাজনের কাছে কৃতজ্ঞ যে তারা এই কফি বইটি প্রকাশ করেছে এবং আমাকে লেখক সম্মান দিয়েছে এবং আমার গল্পটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার উদ্যোগটি নিয়েছে।
শিল্পী সামিউল ইসলাম পোলাক বাংলাদেশ ও ভারত, দুই বাংলার একজন জনপ্রিয় কবিতা আবৃত্তিশিল্পী।তার কন্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা জীবন্ত হয়ে উঠে। তার জন্ম ফরিদপুর জেলায়।তার পুরো নাম এ এফ এম সামিউল ইসলাম।তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ফরিদপুর থেকে আবৃত্তির প্রশিক্ষণ নেন।রবীন্দ্র কাব্য সাহিত্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন শান্তিনিকেতনের শিক্ষয়িত্রী পরমা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে।বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, ব্রজবুলি, হিন্দি ও উর্দুতে কবিতা আবৃত্তি করেন।তার প্রথম কবিতা আবৃত্তির এলবাম “ইতি রবীন্দ্রনাথ” প্রকাশিত হয়, ভারতের সুপ্রসিদ্ধ কম্পানি হিন্দুস্থান রেকর্ডস থেকে ২০১৭ সালে।দ্বিতীয় একক সংকলন প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালে ভারতের বিখ্যাত কম্পানী এইচ এম ভি অধুনা সারেগামা বাংলা থেকে।বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লার পর সামিউল ইসলাম পোলাক দ্বিতীয় শিল্পী, যার হিন্দি আবৃত্তি প্রকাশিত হয় ভারতের সারেগামা থেকে।দেশে বিদেশে নানান জায়গায় একক আবৃত্তির পাশাপাশি মঞ্চে দ্বৈত পরিবেশনা করেছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ইন্দ্রাণী সেন, শামা রহমান, শ্রাবণী সেন, লোপামুদ্রা মিত্র, শ্রেয়া গুহঠাকুরতা, অদিতি মহসিন, জয়তি চক্রবর্তী, ইমন চক্রবর্তী, সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিত এবং স্বপ্নীল সজীব এর সাথে।বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে স্বর্ণপদক পেয়েছিল ২০০১ সালে।
শ্রেষ্ঠ আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে অর্জন করেছেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ফেম এওয়ার্ড (বাইফা) ২০২২, ২০২২, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম সম্মাননা স্মারক, কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল বই মেলা থেকে শ্রেষ্ঠ আবৃত্তিশিল্পী’র পুরুষ্কার। এছাড়া তাকে আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে অভিজ্ঞান পত্র দিয়ে সম্মান প্রদান করেছে ভারতীয় হাই কমিশন, ঢাকা, ইউ এস এম্বাসি ঢাকা, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রী অরবিন্দ ইন্সটিটিউট অব কালচার, ইন্দিরা গান্ধি কালচারাল সেন্টার।খুব শীঘ্রই সকল আন্তর্জাতিক অডিও স্ট্রিমিং মিডিয়া ও ইউটিউবে প্রকাশিত হবে তার প্রথম কবিতার সিরিজ, “আই রিড আই রিসাইট”।