ওয়েব ডেস্ক: কক্সবাজারে মামলায় ভয় দেখিয়ে টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সাহাব উদ্দিন চৌধুরী নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে সদরের চৌফলন্ডি এলাকার এক যুবকের মোবাইলে কল দিয়ে তিনি এই চাঁদা দাবি করেন।
অভিযুক্ত যুবক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথিত গঠিত কমিটির সমন্বয়ক ও চৌফলন্ডি ইউনিয়নের ছাত্রদলের কর্মী। তবে ওই যুবককে অছাত্র বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী যুবক। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অভিযুক্তকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
তবে কক্সবাজার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেছেন, চাঁদা তোলার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়। এরইমধ্যে তারা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। সাহাব উদ্দিন নিজেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দাবি করে একটি সার্টিফিকেট দেখিয়ে সদস্য হয়েছিলেন।
এদিকে, মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির কথোপকথনের ৪ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাতে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সাহাব উদ্দিন চৌধুরী ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ভুক্তভোগী যুবককে বলেন, মামলা শুক্রবার রাতে হয়ে যাবে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু সহযোগিতা করতে পারছি না। রাত ১০টার মধ্যে এজাহার জমা দিয়ে দেবে। এজাহার জমা দিতে আমি নিজেও যাব। তুই যদি টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করিস তবে এখনও মামলা বাদ দেওয়ার সুযোগ আছে। আমি বাদ দেবো, সমস্যা নেই। এখানে আমরা ছাত্ররা বেশি। ভুলটা আমার। যদি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কিছু টাকা নিতে পারতাম তাহলে নীরবে তোর নামটা কেটে দিতে পারতাম। চেয়ারম্যান টাকা দেয় নাই। এজাহার লিখার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে থানা থেকে আমাকে কল দেওয়া হয়। সেটি লোটাস নিজেই শুনেছে। আমার সমন্বয়কের সংখ্যা বেশি। যদি মামলার বাদি আমি হতাম তাহলে নিয়ন্ত্রণ আমার হতো। চেয়ারম্যানের নাম বাদ দিয়েছি আমি। চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়েছি যে সেটি রিয়াদ মণি শুনলে রাগ করবে। তাই তোকে অবগত করলাম। আমি আমার পলিটিক্স কাউকে বুঝতে দেই না। তুই আবার কিছু মনে করিস না। টাকাটা আমি নিচ্ছি না। এটি বাকি সদস্যদের জন্য। তোর কাছে যখন টাকা, তাই তুই দেখেশুনে দিস।
রাকিব নামে এক ছাত্র বলেন, সাহাব উদ্দিন চৌধুরী অছাত্র হয়ে কীভাবে সমন্বয়ক হলো? সে ছাত্রদলের কর্মী। কমিটিতে সে কীভাবে জায়গায় পেল প্রশ্ন সমন্বয়কদের কাছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহেদ বলেন, দেখেন অনেকেই নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিচ্ছে। তবে বাস্তবে কোনও কমিটি নেই। বিষয়টি জানার পর তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তবে ভুক্তভোগী যুবক নিজের নিরাপত্তার কারণে পরিচয় দিতে অনিচ্ছুক।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তাকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি অথবা বিশেষ সুবিধা দাবি করলে থানায় সোপর্দ করার আহ্বান জানান।