জেলা প্রতিনিধিঃ
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) ভোররাতে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং যাওয়ার পর পাহাড় থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসহাক আলী খান পান্নার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তার বড় ভাইয়ের শ্যালক জসিম উদ্দিন খান দৈনিক প্রত্যয়ে কে বলেন, সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন পান্না। সেখানে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে পাহাড়ে তার মৃত্যু হয়। তবে তার মৃত্যু গুলিতে নাকি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিলংয়ের একটি থানায় তার মরদেহ আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
ইসহাক আলী খান পান্নার বড় ভাইয়ের ছেলে মো. কামরুজ্জামান খান নাদিম দৈনিক প্রত্যয় কে বলেন, চাচা মারা গেছেন। আমরা যাচ্ছি পরে আপনাকে সব জানাবো। তবে তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা নিশ্চিত করেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ভারতে পালানোর সময় পান্নার সঙ্গে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনও ছিলেন। পান্না যখন স্ট্রোক করেন তখন ওই আওয়ামী লীগ নেতা তাকে ফেলে পালিয়ে যান। পরে বিএসএফের সদস্যরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
পান্নার আপন ভাগনে ও কাউখালীর চিড়াপাড় সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েকুজ্জমান মিন্টু জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। সেখানে একটি থানায় তার মরদেহ আছে।
তবে এ বিষয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ হারুন অর রসিদ বলেন, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইসহাক আলী পান্না। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটি ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
ইসহাক আলী খান পান্না পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান পান্না। পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে সরে যেতে হয় তাকে। পেশাগত জীবনে বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারমান ছিলেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।