ওয়েব ডেস্ক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের রায়ে চাকরিচ্যুতির আদেশ বহাল থাকলেও পরবর্তীতে রিভিউ শুনানিতে তা পুনর্বিবেচনায় আসে। সর্বশেষ আপিল বিভাগ মামলাটি শুনে তাদের পুনরায় চাকরিতে বহালের নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আদালতের আদেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এর আগে ২০০৩ ও ২০০৪ সালে বিভিন্ন স্মারকের মাধ্যমে তাদের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ৯ বছর পর কিছু দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আদালতকে ভুল পথে পরিচালিত করে নিয়োগকে অবৈধ বলে ঘোষণা করান।
ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা অনেকের মতে ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি ও অনৈতিক। বরখাস্ত হওয়ার পর অনেকেই চরম আর্থিক ও মানসিক কষ্টে ভুগেছেন। কেউ কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন, বাকিরা মানবেতর জীবনযাপন করেছেন।
২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাদের দাবির পক্ষে অবস্থান নেয়।
পরে ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে চাকরিচ্যুত এসব কর্মীদের রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করা হবে।
মূলত সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া ২০০৪ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন, যেখানে তিনি নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। ওই রিট ২০০৬ সালে খারিজ হয়ে গেলেও, পরে গাজীপুর-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হক ২০১০ সালে রিভিউ আবেদন করেন। তার ভিত্তিতে ২০১১ সালে আদালতের রায়ে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিচ্যুত হন।