ওয়েব ডেস্ক: ডাকসুতে শিবির প্যানেল ৫ মাসে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে, পরের ৭ মাস অতিরিক্ত কাজ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রশিবির আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রকম বিজয় অর্জনের পরে সম্পূর্ণ প্যানেলকে ডেকে বলেছি এক বছর সময় শিক্ষার্থীদের যা কথা দিয়েছো তার থেকে কত বেশি করা যায় তার প্রতিযোগিতা করো। যা কথা দিয়েছো তা ৫ মাসে শেষ করে বাকি ৭ মাস অতিরিক্ত কাজ করো। এরপর তোমাদের সঙ্গে আমাদের কথা হবে।
নবীন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকদের মাধ্যমে চিরকুটে বিভিন্ন প্রশ্ন নেওয়া হয়। সেসব প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সাদ্দাম বলেন, আমরা কাউকে ডেকে ডেকে আমাদের সংগঠন করতে বলি না। আমরা ইমপ্রুভমেন্টের কাজটা করি। যার পছন্দ হবে, সে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। আমাদের একটিভিজম দেখে যদি কারো ভালো লাগে, সে আসতে পারে। এখানে এলে নিজেকে গড়া যায়, একাডেমিক এক্সিলেন্সি তৈরি করা যায়, আবার নেটওয়ার্কিং ডেভেলপ করার সুযোগও পাওয়া যায়।
ছাত্রশিবিরের বিকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারো কাছে যদি শিবিরের থেকে ভালো অপশন থাকে, তবে আপনি সেখানে যেতে পারেন। আমরা কাউকে ইনফোর্স করে আমাদের সংগঠনে আনতে চাই না। আমরা আপনাকে শুধু জীবন গঠনের জন্য ডাকব।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী জীবনের সঠিক ব্যবহার শিখতে হলে ইসলামী জীবনবোধকে আঁকড়ে ধরতে হবে। ছাত্রশিবির সেই সৌন্দর্যের দিকে আহ্বান জানায়। ছাত্রশিবির কেবল রাজনৈতিক সংগঠন নয়, বরং এটি একটি আদর্শভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে একজন শিক্ষার্থী তার চরিত্র, জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।
নোবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সৈকতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ বরকত আলী, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পাদক হাফেজ মুহাম্মদ আবু মুসা, শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৬০০ নবীন শিক্ষার্থীদেরকে কোরআন শরীফের পাশাপাশি একটি পরিচিতিমূলক বই, কলম, ফুল এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে আরিফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ছাত্রশিবির বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া রমজান মাসজুড়ে ‘গবেষণায় হাতেখড়ি’ শীর্ষক একটি কর্মশালায় ২০০ শিক্ষার্থী সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি আরও জানান, নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমে সহায়তার জন্য প্রায় এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
নবীনদের উদ্দেশ্যে সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সৈকত বলেন, কথা দিচ্ছি ছাত্ররাজনীতির নামে যে অপসংস্কৃতি আর লেজুড়বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জীবনকে দুর্বিষহ করেছিল বিগত বছরগুলোতে সেই অচলায়তন আমরা তোমাদেরকে নিয়ে ভাঙব।
ক্যাম্পাসজীবন হোক জ্ঞান, দক্ষতা, নেতৃত্ব গুণে নিজকে বিকশিত করার উপযুক্ত সময়। ইনশাআল্লাহ এই অগ্রযাত্রায় আমরা নোবিপ্রবি ছাত্রশিবির সর্বদা তোমাদের পাশে থাকব।