1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. Azharislam729@gmail.com : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  4. bobinrahman37@gmail.com : Bobin Rahman : Bobin Rahman
  5. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  6. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  7. harun.cht@gmail.com : চৌধুরী হারুনুর রশীদ : চৌধুরী হারুনুর রশীদ
  8. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan : Rakibul Hasan
  9. msharifhossain3487@gmail.com : Md Sharif Hossain : Md Sharif Hossain
  10. humiraproma8@gmail.com : হুমায়রা প্রমা : হুমায়রা প্রমা
  11. dailyprottoy@gmail.com : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  12. namou9374@gmail.com : ইকবাল হাসান : ইকবাল হাসান
  13. mohammedrizwanulislam@gmail.com : Mohammed Rizwanul Islam : Mohammed Rizwanul Islam
  14. hasanuzzamankoushik@yahoo.com : হাসানুজ্জামান কৌশিক : এ. কে. এম. হাসানুজ্জামান কৌশিক
  15. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  16. niloyrahman482@gmail.com : Rahman Rafiur : Rafiur Rahman
  17. Sabirareza@gmail.com : সাবিরা রেজা নুপুর : সাবিরা রেজা নুপুর
  18. prottoybiswas5@gmail.com : Prottoy Biswas : Prottoy Biswas
  19. rajeebs495@gmail.com : Sarkar Rajeeb : সরকার রাজীব
  20. sadik.h.emon@gmail.com : সাদিক হাসান ইমন : সাদিক হাসান ইমন
  21. safuzahid@gmail.com : Safwan Zahid : Safwan Zahid
  22. mhsamadeee@gmail.com : M.H. Samad : M.H. Samad
  23. Shazedulhossain15@gmail.com : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু
  24. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  25. showdip4@gmail.com : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
  26. shrabonhossain251@gmail.com : Sholaman Hossain : Sholaman Hossain
  27. tanimshikder1@gmail.com : Tanim Shikder : Tanim Shikder
  28. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :
  29. Fokhrulpress@gmail.com : ফকরুল ইসলাম : ফকরুল ইসলাম
  30. uttamkumarray101@gmail.com : Uttam Kumar Ray : Uttam Kumar Ray
  31. msk.zahir16062012@gmail.com : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক
ব্রেকিং নিউজ
‘ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ ছয়টি মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন’ যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা : সন্ত্রাসী পাতা সোহেল-সুজন গ্রেপ্তার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ইসি ওয়াদাবদ্ধ : সিইসি শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে কোনো অস্থিরতা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘ইচ্ছামতো’ আইন-বিধি সংশোধন করায় ইসির প্রতি ক্ষোভ জোনায়েদ সাকির বতসোয়ানার রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশি দূতের পরিচয়পত্র পেশ আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোসহ সাত হত্যায় আজ ১৮তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ পেনাল্টি মিসে বছরের শেষ ম্যাচে জয়বঞ্চিত ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ভারতকে হারানোয় হামজা-জামালদের ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা

বাংলাদেশে ব্যবসা বড় হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির

  • Update Time : বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ওয়েব ডেস্ক: বাংলাদেশের বাজারে ব্যবসা করা বিদেশি (বহুজাতিক) কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িকভাবে আরও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। যেখানে দেশীয় অধিকাংশ কোম্পানি ব্যবসায় হোঁচট খাচ্ছে, সেখানে বিদেশি কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি আসছে। বিশেষ করে দেশের বাজারে ব্যবসা করা বিদেশি বড় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিধিও বড় হচ্ছে।

তবে, বেশ কয়েক বছর ধরে কোম্পানিগুলোকে তাদের করা মুনাফার বড় অংশই নিজ দেশে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এমনকি লোকসান করা কোম্পানিও বিনিয়োগের অর্থ সরিয়ে নিচ্ছে। এতে বাংলাদেশ থেকে ওইসব বিদেশি কোম্পানির হাত ধরে বড় অঙ্কের অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক চিত্র

দেশের বাজারে বর্তমানে ২০০-এর বেশি বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করছে। এর মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারে বড় মূলধনী ১৩টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওই কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সবগুলো কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচিত সময়ে সম্মিলিতভাবে ১৩টি কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ শতাংশের বেশি। শুধু আলোচিত এই তিন মাস নয়, আগের দুই পূর্ণ অর্থবছরেও কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হওয়া দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। যদিও দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। এর মধ্যেও বিদেশি কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসা করেছে, এটি অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক দিক। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরলে এবং মূল্যস্ফীতি কমে এলে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতাও বাড়বে, এতে কোম্পানিগুলোর ব্যবসার পরিধিও আরও বাড়বে। শুধু বিদেশি কোম্পানি নয়, দেশীয় কোম্পানিগুলোও তখন ভালো ব্যবসা করতে সক্ষম হবে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সবগুলো কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচিত সময়ে সম্মিলিতভাবে ১৩টি কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ শতাংশের বেশি। শুধু আলোচিত এই তিন মাস নয়, আগের দুই পূর্ণ অর্থবছরেও কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল

সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইডিজি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলী ইমাম বলেন, ‘কোম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে তাদের ব্যবসায় যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, এটি মূলত গত বছরের বিক্রি কম থাকার প্রভাব। প্রকৃতপক্ষে, ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। তাই, বিক্রি বাড়ারও কোনো কারণ নেই। এছাড়া, বর্ধিত কাঁচামালের ব্যয়, উচ্চ পরিচালন ব্যয় এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হার কোম্পানিগুলোর মুনাফা প্রবৃদ্ধিতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসাও বাড়বে এবং ব্যয় বহন শেষে মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি আসবে।’

তিন মাসে কোম্পানিগুলোর আয় ও প্রবৃদ্ধি

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো হলো— গ্রামীণফোন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি), রবি আজিয়াটা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বার্জার পেইন্টস, ম্যারিকো, সিঙ্গার বাংলাদেশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, আরএকে সিরামিকস, রেকিট বেনকিজার, বাটা শু, লিন্ডে বাংলাদেশ ও ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড।

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এই ১৩ কোম্পানির সম্মিলিত আয় হয়েছে ১৯১.৯৬ বিলিয়ন বা ১৯ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ১৭৭.৪৯ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে সম্মিলিতভাবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে ১৪.৪৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৫ শতাংশ।

একক কোম্পানি হিসেবে তিন মাসে সর্বোচ্চ আয় হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর, যার পরিমাণ ৯৪.৬৮ বিলিয়ন বা নয় হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানির আয় হয়েছিল ৮৫.০৩ বিলিয়ন বা আট হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। এই হিসাবে আলোচিত তিন মাসে এককভাবে কোম্পানির আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ।

তবে, প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় আলোচিত তিন মাসের ব্যবসায় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে আরএকে সিরামিকসের। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানির আয় হয়েছে ২.০৬ বিলিয়ন বা ২০৬ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে হয়েছিল ১.৩৪ বিলিয়ন বা ১৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আলোচ্য সময়ে কোম্পানির ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৪ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ারে, যার হার ২৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে .৮০ বিলিয়ন টাকার ব্যবসা করা কোম্পানিটি এবার ব্যবসা করেছে এক বিলিয়ন টাকা।

ব্যবসায় তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হওয়া ম্যারিকো বাংলাদেশের আয় আলোচিত তিন মাসে ২৩ শতাংশ বেড়ে পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এছাড়া, বাটা শু’র আয় ১৯ শতাংশ বেড়ে ১.৮৪ বিলিয়ন, সিঙ্গার বাংলাদেশের আয় ১৫ শতাংশ বেড়ে ৪.১২ বিলিয়ন এবং রেকিট বেনকিজারের আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ১.৪৮ বিলিয়ন টাকা হয়েছে। তবে লিন্ডে বাংলাদেশ, বার্জার পেইন্টস, লাফার্জহোলসিম, গ্রামীণফোন ও রবি আজিয়াটার ব্যবসায় ১ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

ব্যবসা বাড়লেও মুনাফায় ভাটা

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ব্যবসায় বড় প্রবৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন ধরনের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করতে পারেনি। আলোচিত সময়ে ১৩ কোম্পানির সম্মিলিতভাবে নিট মুনাফা হয়েছে ২১.৫০ বিলিয়ন বা দুই হাজার ১৫০ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ২১.৫৬ বিলিয়ন বা দুই হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আলোচিত তিন মাসে কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা কমেছে ছয় কোটি টাকা বা ০.২৭ শতাংশ।

এই ১৩ কোম্পানির মধ্যে আলোচিত তিন মাসে ১১টির মুনাফা হয়েছে এবং দুটির লোকসান হয়েছে। ব্যবসা বাড়ার সুবাদে মুনাফা করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে নয়টির নিট মুনাফায় সামান্য পরিমাণ প্রবৃদ্ধিও হয়েছে। তবে, গ্রামীণফোন ও বিএটিবিসির ব্যবসা বাড়া সত্ত্বেও মুনাফা কমেছে। আর লোকসান করা দুই কোম্পানিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় নিট লোকসান বেড়েছে।

তালিকাভুক্ত ১৩ বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে নয়টিই গত অর্থবছরে অর্জিত নিট মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিগুলো হলো— গ্রামীণফোন, ম্যারিকো, লাফার্জহোলসিম, রবি, রেকিট বেনকিজার, সিঙ্গার, লিন্ডে বাংলাদেশ, আরএকে সিরামিকস ও ইউনিলিভার। এর মধ্যে সিঙ্গার ও আরএকে সিরামিকস লোকসান করেও বড় অঙ্কের টাকা লভ্যাংশ হিসাবে কোম্পানি থেকে সরিয়ে নিয়েছে

তিন মাসে প্রায় ৯৫ বিলিয়ন বা সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করা কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বিভিন্ন খরচ বহন শেষে মাত্র ৩.০৫ বিলিয়ন বা ৩০৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। আলোচিত তিন মাসে আগের বছরের একই সময়ের ৩.৯৭ বিলিয়ন বা ৩৯৭ কোটি টাকার তুলনায় কোম্পানির নিট মুনাফা কমেছে ০.৯২ বিলিয়ন বা ৯২ কোটি টাকা।

বহুজাতিক বড় এই মূলধনী কোম্পানিটির মুনাফা কমার মূল কারণ ছিল ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তামাক জাতীয় পণ্যে সরকারের বর্ধিত করারোপ। আলোচিত তিন মাসের প্রায় সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা আয়ের মধ্যে কোম্পানির ভ্যাট, শুল্ক ও করবাবদ আট হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারকে দিতে হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ভ্যাট, শুল্ক ও করবাবদ ছয় হাজার ৮২৩ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব তহবিলে দিয়েছিল। অর্থাৎ আলোচিত তিন মাসে রাজস্ব হিসেবে সরকারকে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বেশি দিতে হয়েছে, যা কোম্পানির মুনাফা কমার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

আলোচিত তিন মাসে গ্রামীণফোন নিট মুনাফা করেছে ১২.৬৯ বিলিয়ন টাকা, আগের বছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ১৪.৬৪ বিলিয়ন টাকা। এছাড়া, রবির মুনাফা ০.৫৪ বিলিয়ন বেড়ে ২.৪২ বিলিয়ন টাকা, লাফার্জহোলসিমের মুনাফা ০.৩২ বিলিয়ন বেড়ে ১.২০ বিলিয়ন টাকা এবং ম্যারিকো বাংলাদেশে মুনাফা ০.৭০ বিলিয়ন বেড়ে ১.৫৪ বিলিয়ন টাকা হয়েছে। এর বাইরে বার্জার, রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার ও লিন্ডে বাংলাদেশের মুনাফা সামান্য বেড়ে যথাক্রমে ০.৬০ বিলিয়ন, ০.২৫ বিলিয়ন, ০.২৫ বিলিয়ন এবং ০.১০ বিলিয়ন টাকা হয়েছে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও আরএকে সিরামিক আলোচিত তিন মাসে লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। তবে, সিঙ্গার বাংলাদেশ ও বাটা শু’র লোকসান বেড়েছে। সিঙ্গারের নিট লোকসান হয়েছে ০.৪৮ বিলিয়ন এবং বাটা শু’র লোকসান ০.১৪ বিলিয়ন টাকা। বাটা শু’র লোকসানের কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি বিকল্প আয় খাতে লোকসান হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার বেশি, পরিচালন ব্যয় বেড়েছে আরও পাঁচ কোটি টাকার মতো এবং জমা হওয়া অর্থের বিপরীতে সুদের আয় কমেছে। এতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ লোকসান বেড়েছে কোম্পানিটির।

কোম্পানি ও বিশ্লেষকেরা যা বলছেন

এ বিষয়ে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘অনেক কোম্পানি টিকে থাকতে প্রণোদনা দিয়ে তাদের পণ্যের বিক্রি বাড়িয়েছে। এতে ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি আসলেও মুনাফা কমেছে।’

সিমেন্ট শিল্পের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘এই খাতে চাহিদার চেয়ে উচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। বিপরীতে সরকারি প্রকল্পগুলোর কাজ এক বছরের বেশি সময় ধরে ধীরগতিতে চলছে। এতে বাধ্য হয়েই এই খাতের ব্যবসায়ীরা বিক্রয় প্রচারণাবাবদ বেশি ব্যয় করার পাশাপাশি প্রণোদনা দিয়ে বিক্রি বাড়িয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোর মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।’

ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কিছু লক্ষণ দেখা গেছে। কোম্পানিগুলোর বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়া অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।’

তবে, মূল্যস্ফীতি বড় চ্যালেঞ্জ— জানিয়ে এই বিশ্লেষক বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ২০২২ সালের পর থেকে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যবসায় তেমন প্রবৃদ্ধি পাচ্ছে না। এ বছর ভালো ব্যবসা করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ভয়ের বিষয় হলো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতাকে দমন করে রেখেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলে বছরশেষে কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি নাও থাকতে পারে। আর ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানিতে বিঘ্ন হওয়া এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতি কম থাকলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা বাড়ত— এমন মত দিয়েছেন ইডিজি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলী ইমামও। তিনি মনে করেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা মূল্যস্ফীতির কারণে খুবই সামান্য ছিল। দেশে ওই তিন মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের ওপরে ছিল। যদি মূল্যস্ফীতি কম থাকত, আর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ভালো থাকত, তাহলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় আরও বেশি প্রবৃদ্ধি আসতে পারত।’

লোকসান করেও নিজ দেশে অর্থ সরানো

তালিকাভুক্ত ওই ১৩ বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে নয়টিই গত অর্থবছরে অর্জিত নিট মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিগুলো হলো— গ্রামীণফোন, ম্যারিকো, লাফার্জহোলসিম, রবি, রেকিট বেনকিজার, সিঙ্গার, লিন্ডে বাংলাদেশ, আরএকে সিরামিকস ও ইউনিলিভার। এর মধ্যে সিঙ্গার ও আরএকে সিরামিকস লোকসান করেও বড় অঙ্কের টাকা লভ্যাংশ হিসাবে কোম্পানি থেকে সরিয়ে নিয়েছে।

গত অর্থবছরে ওই নয় কোম্পানি সম্মিলিতভাবে নিট মুনাফা করেছে ৮১.৬৭ বিলিয়ন বা আট হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। কিন্তু লভ্যাংশ হিসাবে নিয়েছে ৯৭.৯৪ বিলিয়ন বা নয় হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো মুনাফার চেয়ে ১৬.২৭ বিলিয়ন বা এক হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বেশি নিয়েছে।

একক কোম্পানি হিসেবে তিন মাসে সর্বোচ্চ আয় হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর, যার পরিমাণ ৯৪.৬৮ বিলিয়ন বা নয় হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানির আয় হয়েছিল ৮৫.০৩ বিলিয়ন বা আট হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। এই হিসাবে আলোচিত তিন মাসে এককভাবে কোম্পানির আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুনাফার চেয়েও বেশি লভ্যাংশ নেওয়ার অর্থ হলো বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এই অর্থ তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ার লক্ষণ। তবে কেউ কেউ বলছেন, ডলার সংকটের কারণে বিগত বছরগুলোতে কোম্পানিগুলো তাদের দেশে লভ্যাংশ নিতে পারেনি, সর্বশেষ বছরগুলোতে তাই বেশি হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করে নিজ দেশে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো আগের বছরগুলোতে লভ্যাংশ নিয়ে যেতে পারেনি। এখন সংকট কিছুটা কাটায় সেই অর্থ একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এছাড়া, তিন-চার বছরে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তাই অনেকেই ভাবছে, ভবিষ্যতে আরও অবমূল্যায়ন হলে তাদের লভ্যাংশের প্রকৃত মূল্য কমে যেতে পারে। সেই বিবেচনায় হয়তো তারা বেশি হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করে নিজ দেশে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..