ওয়েব ডেস্ক: আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া।  

সোমবার (১ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যুক্ত হন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে, রেজা কিবরিয়া এসে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আমি আমাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানাই। তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।

বিএনপির ৩১ দফার আলোকে রেজা কিবরিয়া বাংলাদেশ গঠন ভূমিকা রাখতে পারবে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশের একজন অত্যন্ত বিশিষ্ট সন্তান, যিনি তার নিজের যোগ্যতা বলে আইএমএফ এর অত্যন্ত উচ্চ পদে কাজ করেছেন এবং তিনি দেশে এসে ২০১৮ সালে গণফোরাম থেকে আমাদের যে যুক্তফ্রন্টের (নির্বাচনী জোট) মনোনয়ন নিয়ে ধানের শীষ নিয়ে তিনি নির্বাচন করেছিলেন। পরে আপনারা দেখেছেন তিনি রাজনীতির সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ- ১ আসনে (বাহুবল-নবীনগর) ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন।

বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. রেজা কিবরিয়া তার অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুন বিনির্মাণে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে অবদান রাখবেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, বিএনপিতে যোগ দিতে পেরে আমি গর্বিত। আমি আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেছি।

তিনি বলেন, এই দলটার (বিএনপির) ইতিহাসটা হলো গণতন্ত্রের ইতিহাস। দুই দুইবার তারা গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের থেকে। একবার শেখ মুজিবের গণতন্ত্র ধ্বংস…সেখান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রক্ষা করলেন। আর দ্বিতীয়বার শেখ হাসিনা-জেনারেল এরশাদের সঙ্গে গণতন্ত্র ধ্বংস করেন। আমাদের বেগম খালেদা জিয়া যিনি এখন অনেক অসুস্থ…সবাই দোয়া করবেন ওনার জন্য। তিনি আবার এটা রক্ষা করলেন।

‘বাবা-মায়ের ব্লাড লাইন তারেক রহমান’

রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা মনে করি যে বিএনপি এখন যেই নেতৃত্বে আছে এবং যারা আছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের তাদের সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তাদের যে ভিশন দেশের জন্য এটা আগের ভিশন না। অনেক কিছু বদলে গেছে।’

‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে রক্ত এটা কোন কোয়ালিটির আপনারা যদি চিন্তা করেন…. ওনার বাপ কি ছিলেন এবং মা কি আছেন… এটা ইনক্রেডিবল, এটা বাংলাদেশে আর কারো ওই কোয়ালিটির ব্লাড লাইন নাই, আপনাদেরকে বলতে পারি। আমরা সবাই ওনাকে (তারেক রহমান) সাহায্য করব একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।’

রেজা কিবরিয়া বলেন, তিনি বিদেশে আছেন এটা একদিক থেকে দুঃখজনক আমাদের দেশের মানুষের কাছে নাই। আরেকদিক থেকে আমি এটাতে খুশি যে, উনি (তারেক রহমান) বিদেশের সব কোয়ালিটি, সব প্রশাসনিক জিনিসগুলো দেখছেন, শিখছেন এবং সেগুলো বাংলাদেশে আনবেন এটা আশা করি। ওনার ইংল্যান্ডে থাকা ও দেশের মানুষের জন্যে একটা লাভজনক জিনিস। তিনি অনেক কিছু নিয়ে আসবেন এ দেশে যেটা আগে ছিল না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত করতে, এশিয়ার মধ্যে প্রথম তিন দেশের মধ্যে আনতে অসম্ভব কিছু না। আপনারা ভাবছেন, আমি কি রূপকথার মতো বলছি। এটা পরে দেখবেন। আমি ৩৫টি দেশে কাজ করেছি প্রায় ৪০ বছর। আপনাদেরকে বলতে পারি, আমাদের দেশের মানুষের কোয়ালিটি এটা হলো ‘টপ ক্লাস’ এবং এই মানুষগুলোকে দিয়ে একটা ‘টপ ক্লা’ দেশ প্রথম সারির দেশ তৈরি করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে এই সুযোগটা যদি ভোটাররা দেয় তাহলে আপনারা দেখবেন তারা কি পারে এই দেশের জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, তারা কি করতে পারবে, আপনারা তখন দেখতে পারবেন। আমি আশা করি আমার এলাকায় নবীগঞ্জ-বাহুবল সেখানে আমার কাজ করার একটা সুবিধা হবে এবং যদি বিএনপি মনে করে জাতীয় কোনো জায়গায় আমাকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার। আমি চাই, দেশের জন্য কাজ করতে।

যোগদান অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। বিএনপির আগামী সংসদ নির্বাচনে জন্য ২২৭ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেখানে হবিগঞ্জ-১ আসনটি ফাঁকা রেখেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া বিএনপির জোটসঙ্গী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে একই আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকেই নির্বাচন করেছিলেন।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে রেজা কিবরিয়া গণফোরামে যোগদান করে পরে দলটির সাধারণ সম্পাদক হন। পরে তাকে কেন্দ্র করে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এরপর তিনি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ গঠন করেন। সেখানে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সেখানে তাকে কেন্দ্র করে দলটিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়। পরে বিভক্ত দল আমজনতার দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে রেজা কিবরিয়া।