রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:বনবিভাগে লোকবল সংকটের কারণে পাহাড়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজার হচ্ছে।স্থানীয় প্রশাসনিক ও প্রতিষ্ঠানের দন্ধের কারণে বনাঞ্চল ধংসের পাশাপাশি জীব বৈচিত্র হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নতুন করে কোন বাগান চারা রোপন করতে পারছে না বলে বনবিভাগের অভিযোগ।
অনুসন্ধানে ও বনবিভাগ সুত্রে জানাগেছে, বনবিভাগের লোকবল অভাবে রির্জাভ ফরেষ্ট এ অবৈধ অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বেদখল হয়ে বসতি স্থাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিওসহ বহু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এসব বনাঞ্চলে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নতুন করে বৃক্ষ রোপন করা যাচ্ছে না আঞ্চলিক দলগুলোর বিরোধিতার কারণে। দেশে বনবিভাগের রেঞ্জকর্মকর্তার পদ ছিল প্রায় ৬০৬৮টি । ইতিমধ্যে ৭ জন সহকারী বনসংরক্ষক পদন্নোতি পেয়েছে । এর মধ্যে রেঞ্জকর্মকর্তা কর্মরত ছিল প্রায় ৮২ জন ইতি মধ্যে অবসরে গিয়ে বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৬২ জন রেঞ্জকর্মকর্তা । প্রধান বনসংরক্ষক ,বনসংরক্ষক ও বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতি হয়েছে । এতে অনেক পদ শুন্য রয়েছে বলে বনঅধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে।
২০১৪ সালে সাত শতাধিক ফরেষ্টার পদে নিয়োগ দিয়েছেন বনবিভাগ । রেঞ্জকর্মকর্তাসহ অন্যন্যা নিয়োগ বন্ধ থাকায় বনবিভাগে লোকবল সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ফরেষ্ট গাডদের সকল প্রকার যোগ্যতা থাকার পরও পদন্নোতি না হওয়ায় অভিযোগ উঠেছে। একেকজন ফরেষ্ট গাড এর চাকরি মেয়াদ ৩০/৩২ বছর হয়েছে তারপরও পদন্নোতি হচ্ছে না । এই সময়ে পদন্নোতি দাবী উঠেছে।
বনবিভাগ সুত্রে জানাগেছে,রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখল করে একাধিক বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্টান নিমার্ণ গড়ে তুলেছে । বৌদ্ধ ধর্মকে পুজি করে শরণংকর থের (৩৫) বিরুদ্ধে অভিযোগ থানায় মামলা দেয়া হয়েছে । খুরুশিয়া রেঞ্জ সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে শতাধিক হেক্টর বনভুমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে।
ঘটনাস্থলে শিলক পুলিশ ফাড়ির এস আই মুজিবুর রহমান সংবাদকর্মীদের বলেন, বনবিভাগের লোকবল সংকটের কারণে কেউ বনভুমি দখল করতে গেলে বাধা দেয় বনবিভাগ । তিনি আরো বলেন,সরকারী বনভুমি দখলের কোন নিয়ম নেই । তাই বনবিভাগের লোকবলের সংকটের কারণে পুলিশের সহযোগিতা নেন। সর্বশেষ ৮ জুলাই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অসুপ্রবেশ করত.নিমার্ণ কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেয় বনবিভাগ ও পুলিশ । রির্জাভ ফরেষ্ট দখলের অভিযোগে শরণংকর থের (৩৫) বিরুদ্ধে এই পর্যন্ত ২টা থানায় মামলা দেন বনবিভাগ।
বনবিভাগ ও অনুসন্ধানে জানাগেছে,পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও খুন,অপহরন,চাদাবাজিসহ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকার এবং যৌথ মালিকাধিন বনায়ন করতে পারছে না। যে কোন সংরক্ষিত বনে উন্নয়ন করতে গেলে চাদা দিতে হচ্ছে । ভারী অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বনাঞ্চলে আতংক সৃষ্ট্রি করে বনপ্রহরীদের । এই কারণে মুলত: বনাঞ্চলে রেঞ্জ অফিস করতে পারছে না বনভিাগ ।
এ সব সমস্যার বিষয়ে রাঙ্গামাটি সার্কেলের বনসংক্ষক সানাউল্ল্যা পাটোওয়ারী প্রতিবেদককে জানান,লোকবল সংকটতো আছে,তবে এইবিষয়ে আশাকরি সরকার যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন,বনবিভাগের উন্নয়নসহ সব কিছুতে বিরোধিতার কারণে সকল কার্যত্রম স্থবিরতা বিরাজ করছে । পাহাড়ের মুরব্বী কথা উল্লেখ করে বনসংরক্ষক বলেন,শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ,ভুমি বিরোধ নিস্পতি,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নিয়ন্ত্রনে তথা অধীনে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক না আসা পর্যন্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কোন কাজ করা যাবে না । ভুমি কমিশনের কাজ শুরু হলে বিরোধ নিস্পতি লক্ষ্য বনবিভাগের কাগজপত্র দাখিল করার সুযোগ ছিল ।এসব বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে।