বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
লকডাউনের জেরে ভয়ঙ্কর সমস্যায় পশ্চিমবাংলার সিনেমা শিল্প। সিনেমা থেকে টিভি সিরিয়াল, টালিগঞ্জে এখন সমস্ত ধরনের শুটিংই বন্ধ। সিনেমা হলগুলিও খোলা নেই। নির্মাতা, পরিচালক থেকে শিল্পী, কলাকুশলীদের সকলেই এখন গৃহবন্দি। শুনশান সিনেমা পাড়া। ফলে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিই এখন বিপুল অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ে গিয়েছে। প্রযোজক মহলের আশঙ্কা, লকডাউন যদি মে মাস অবধি চলে, তা হলে মোট ক্ষতি ভারতীয় মুদ্রায় ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় দফায় দেশ জুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে অবধি বাড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই নাকি করোনা ভাইরাস চরম রূপ নিতে পারে ভারতে। মারাত্মাক বাড়তে পারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। বাস্তবিকই যদি ভারতে সেই রূপ নেয় করোনা সংক্রমণ, তা হলে লকডাউনের মেয়াদ নরেন্দ্র মোদির সরকার আরও বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রগুলির মতো চলচ্চিত্র শিল্পও স্তব্ধ হয়ে থাকবে। বন্ধ থাকবে টালিগঞ্জও। তাই নতুন সিনেমা যেমন মে অবধি মুক্তি পাবে না, তেমনই কোনও সিনেমা বা টক শো, টিভি সিরিয়ালগুলির শুটিংও হবে না। ফলে এই শিল্পের ব্যবসা পুরোপুরি থমকে থাকবে।
এর ফলে রীতিমতো অনিশ্চিত নতুন বাংলা সিনেমাগুলির মুক্তির দিনও। মে মাসের প্রথম দিনই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল পরিচালক অনিকেট চট্টোপাধ্যায়ের সিনেমা ‘হবু চন্দ্র রাজা গবু চন্দ্র মন্ত্রী’। ছবিটি নিয়ে দর্শক মহলেও ব্যাপক কৌতূহল ছিল। আশাবাদী ছিলেন নির্মাতাও। এ ছাড়া মে মাসেই মুক্তি পেত সৌকর্য ঘোষালের ‘রক্তরহস্য’, রাজ চক্রবর্তীর ‘ধর্মযুদ্ধ’–সহ বেশ কয়েকটি বাংলা সিনেমার। সমস্ত সিনেমাগুলির মুক্তি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সিনেমার প্রযোজকরা বেশ ক্ষতির মধ্যে পড়ে গিয়েছেন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সাধারণ কলাকুশলীদের। কাজ করলে তবেই তঁাদের রোজগার হয়। কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে তঁারা এখন মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন। কবে ভারত–সহ গোটা পৃথিবী করোনা–মুক্ত হবে, স্বাভাবিক হবে জনজীবন, সে দিকেই এখন তাকিয়ে তঁারা।