বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
সমুদ্র সৈকতে মিলছে সোনা! এমনই গুজবে তোলপাড় হয়ে গেল দিঘা। আর সেই সোনা কুড়োতে লকডাউন ভেঙেই স্থানীয়রা ছুটলেন সেখানে। এমন ঘটনায় হতবাক স্থানীয়দের মধ্যেই অনেক সচেতন মানুষও।
করোনা–হানায় গোটা বিশ্বের সঙ্গে দিশেহারা ভারতও। তার জেরেই চলছে লকডাউন। দিঘায়ও সমস্ত হোটেল বন্ধ। পর্যটকরাও নেই সেখানে। ফলে স্থানীয়দের অনেকেই পড়ে গিয়েছেন বিপাকে। তাঁদের অনেকেই সৈকতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। পর্যটকহীন হওয়ায় এবং লাগাতার লকডাউন চলতে থাকায় তাঁদের রুজিরুটিতে টান পড়েছে। সৈকতে সোনা পাওয়ার গুজবে তাঁরাই প্রভাবিত হন বেশি। এই গুজব বেশ কিছুদিন ধরে চললেও শনিবার তা মাত্রা ছাড়ায়। লকডাউনের নিয়ম ভেঙেই দলে দলে মানুষ ভিড় করতে শুরু করেন সৈকতে। খুঁজতে শুরু করেন সোনা। কিন্তু বোল্ডারের খাঁজে কিছু খুচরো পয়সা খুঁজে পেলেও সোনা পাননি তাঁরা কেউই। রবিবারও তাঁরা সেই খোঁজ থেকে সরে আসেননি। তবে প্রশাসনের তৎপরতায় অবশ্য তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, সোনা পাওয়ার খবরটি নেহাতই গুজব। কিছু মানুষ সেই গুজবে বিশ্বাস করেই ছুটে গিয়েছিলেন সৈকতে। তবে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে যাঁরা সচেতন, তাঁদের বক্তব্য, স্নান করার সময় পর্যটকরা জামা–কাপড় খুলে রেখে সমুদ্রে নামেন। তাঁদের পকেট থেকে অনেক সময়ই টাকা–পয়সা পড়ে যায়। সেগুলির বেশির ভাগই বোল্ডারে আটকে থাকে। কিছু টাকা–পয়সা সমুদ্রে স্রোতে ভেসেও যায়, আবার কিছু ফেরত এসে বোল্ডারে আটকে থাকে। এ ছাড়া অনেক ধার্মিক ব্যক্তিও প্রণাম করে সমুদ্রে টাকা–পয়সা ছুঁড়ে দেন। সেগুলিও অনেক সময় ফিরে স্রোতে ভেসে এসে বোল্ডারে আটকে যায়। যাঁরা সোনা খুঁজছিলেন, তাঁরা সেইসব টাকা–পয়সাই পেয়েছেন। সোনা পাননি। যদি কেউ পেয়ে থাকেন, তা হলে তা নেহাৎই পর্যটকদের কারও হারানো সোনার গয়না।
তবে এমন গুজব ছড়ানোর কারণ নিয়ে প্রশাসন এখন চিন্তিত। কী উদ্দেশ্যে এমন গুজব ছড়ানো হল, তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। এমন গুজব যারা ছড়িয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে তারা। চিহ্নিত হলে গ্রেফতার করা হতে পারে তাদের। ঘটনার তদন্ত চলছে।