আলি হায়দার, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: করোনার এই সময়ে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। সেখানে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের লোকমানখার কান্দি, শ্যামাইকান্দি ও ছোট ছয়সূতী এলাকায় প্রায় আড়াই শতাধিক বিঘা জমি নিষ্কাসনের অভাবে পানিবন্দী হয়ে আছে। এই জমিগুলোতে গত বছরও ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা। বর্তমানে জমি হইতে পানি বের হওয়ার জায়গায় মাটি ভরাট করার ফলে, জমির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
এতে অগ্রহায়ণী ধান চাষ করতে না পাড়ায় দিশেহারা হয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন কৃষক-কৃষাণীরা ।
লোকমানখার কান্দি গ্রামের কৃষক ইউনুছ খান (৯৬) বলেন, মোছা. নাজমা, দ্বীন ইসলাম, মনোয়ারা ও বিল্লাল মিয়ার মাধ্যমে জমির পানি নিষ্কাসনের পথ বন্ধ থাকার কারনে লোকমানখার কান্দি এলাকার প্রায় ১শ বিঘা জমি অনাবাদি রয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ দু’শত বছর যাবত এ রাস্তা দিয়ে জমির পানি যেত। কিন্তু এখন মাটি ভরাট করে বাঁধ দেয়ার ফলে পানির নিচে পড় আছে ফসলি জমি।
কৃষক মো. বোরহান ভূইয়া (৬০) বলেন, মাটি ভরাট করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার ফলে জমির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না বিধায় আলমপুর বন্দের প্রায় ১ শ বিঘা জমি চাষ করতে পারছেন না কৃষকরা।
ছয়সূতী গ্রামের কৃষক আলামিন খাঁ (৪০) বলেন, অতিরিক্ত পানির কারনে প্রায় ৫০ বিঘা জমি সঠিক সময়ে চাষ করতে পারছেন না । যেন তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন তারা।
এব্যাপারে ছয়সূতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর মো. মিছবাহুল ইসলাম বলেন, পানি নিষ্কাসনের অভাবে অনাবাদি জমির ভুক্তভোগী কৃষকগণ আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি আমি অবগত হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে সম্মিলিতভাবে এ সমস্যার সমাধান করার আশ্বাস প্রদান করেছেন।
অভিযুক্ত মো. দ্বীন ইসলাম মিয়া বলেন, আমরা তিন ভাই, জায়গা স্বল্প হওয়ায় বাড়ি করার জন্য মাটি ভরাট করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা বলেন এটা পানি নিষ্কাসনের জন্য স্থায়ী ড্রেন নয়। এর আগে অন্য রাস্তা দিয়ে জমির পানি যেত । তবে তিনি বলেন, মাটির নিচ দিয়ে পাইপ বা পাকা করে ড্রেনের মাধ্যমে পানি সরালে আমার কোন আপত্তি নেই।।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী জানান, ছয়সূতী ইউনিয়নে পানি নিষ্কাসনের অভাবে অনাবাদী জমির বিষয়ে অবগত আছেন। তিনি বলেন, যিনি বা যারা বাঁধ বন্ধ করেছে তা বৈধ না অবৈধ সেটা আগে দেখতে হবে। যদি বৈধ হয় তাহলে পানি নিষ্কাসনের জন্য অন্য রাস্তা করে বা কিভাবে করা যায় সেটার সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবো। আর যদি অবৈধ হয় তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান ।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষক-কৃষাণীরা পানি নিষ্কাসনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানান।