কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:নিবন্ধন বিহীন নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেলের দৌরাত্ম্যে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের অকাল।সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক সহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন আরেক ভাইরাসের সূচনা হয়েছে নিবন্ধন বিহীন নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেল। আর এই নিবন্ধন বিহীন নব্য ভাইরাস আক্রান্ত করে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমকে , দিন দিন মান হারাচ্ছে নিবন্ধীত জাতীয় গনমাধ্যম , এসব অনলাইন টিভি,পত্রপত্রিকার কারণে সেই সব ত্যাগী সংবাদ কর্মীদের মান ক্ষুন্ন করে যাচ্ছে। জন্ম দিচ্ছে প্রতিনিয়ত হলুদ সাংবাদিক। আর এই তথাকথিত অনলাইন পোর্টালে চলছে সাংবাদিক নিয়োগ বানিজ্য ,প্রতিটি থানা, জেলা, বিভাগে নিয়োগ দেয়ার নামে টাকার বিনিময়ে তুলে দিচ্ছে প্রেস কার্ড তথা পরিচয় পত্র। এই বিষয়ে খুববেশি লক্ষণীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে বিশেষ করে ফেইসবুকে দেখা যায়, নামে বেনামে অনলাইন পোর্টাল ও অনলাইন টিভি চ্যানেলে দেশজুড়ে জেলা উপজেলায় সাংবাদিক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে।
সাংবাদিকতার মত এই মহৎ পেশাকে কলুষিত করে যাচ্ছে তথাকথিত অনলাইন পোর্টাল টিভি চ্যানেল নামের ধান্দাবাজ ।মূল লক্ষ্য হচ্ছে অনলাইন পোর্টাল কিংবা টিভি চ্যানেল নাম দিয়ে শিক্ষিত যুবসমাজকে চাঁদাবাজি পথে অগ্ৰসর করে দেয়া। অথচ এমন কিছু যুবক যুবতি যারা জানেনা, ঠিকমতো বাংলা লিখতে, পারেনা অন্যের লিখাকে কপিরাইট করতে, তাছাড়াও সংবাদ সমন্বয় সমন্ধীয় লিখতে গেলে অবশ্যই সাংবাদিকতার সাধারণ জ্ঞান থাকতে হবে । যেমন- কি, কোথায়, কি ভাবে, কি করে ,কখন ,কোথায়, এইসব বিষয় আবশ্যক। তাছাড়াও নেই কোন যোগ্যতা কোন সৎ সাহস । সেই সমস্ত লোকেরা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালের সংবাদদাতা ,সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কাঁধে ক্যামেরা সহ অত্যাধুনিক মিডিয়া উইংয়ের লেপটপ নিয়ে ঘুরে আর নিজেকে বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিজ কর্মরত পত্রিকার সুনাম অর্জন চেষ্টা করে। দেশের বিভাগ, জেলা থেকে প্রকাশ করে যাচ্ছে তথাকথিত নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেল গুলো সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে দেদারসে সংবাদ পরিবেশন এবং বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে প্রকাশ করে যাচ্ছে।
সংবাদ পত্র পত্রিকা সহ নিউজ পোর্টাল, টিভি চ্যানেল চালানোর জন্য অবশ্যই সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত অনুমোদন নিতে হবে, কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল অবৈধভাবে সংবাদ পরিবেশন করে বৈধ সংবাদ মাধ্যম গুলোকে মানক্ষুন করছে।
আর এই সুবাধে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা অনলাইন পোর্টাল ও অনলাইন টিভির কিছু প্রতারক কার্ড দেয়ার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ছলচাতুরীর মাধ্যমে । এর বিরোপ প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করছে।বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে এমন প্রতারণা বড়ই বেমানান , শিকার হচ্ছেন কেউ না কেউ এই প্রতারণার ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রাণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে এবং অনলাইন পোর্টাল ও অনলাইন টিভির চ্যানেল যাতে যে কেউ খুলতে না পারে সেই দিকে নজরাদি দিয়ে বাধ্য বাধকতামূলক নিয়ম কানুন তৈরী করে দিতে হবে।
আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে সুষ্ঠু সাংবাদিকদকতার জন্য প্রয়োজন নির্ভরশীল নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল কিংবা টিভি চ্যানেল যার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ পাবে নিজের যোগ্যতা।বর্তমান সময়ে এমনও কিছু নিউজ পোর্টাল দেখা যায় যাদের কোন অফিস নেই ,কিংবা অস্থিত্ত্ব বলতে শুধু ফেসবুক আইডি ছাড়া অন্য কোথাও স্থায়ী কোন কিছু নেই।বর্তমানে এমন কিছু অনলাইন পোর্টাল ও টিভির চ্যানেল থেকে আচমকা সংবাদ প্রকাশ করা হয় যার সাথে রাষ্ট্রের কোন মিল নেই ওরা নিজেদের পকেট ভারি করতে যতসব আজগুবি সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। বলাবাহুল্য যে অনলাইন পোর্টাল, টিভি চ্যানেল যাতে যে কেউ খুলতে না পারে সেই বেপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়োজিত ব্যক্তিদের কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে সকল অবৈধ নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে প্রকাশক,সম্পাদক কে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সম্প্রতিক সময়ে যতগুলো অনলাইন পোর্টাল ও অনলাইন টিভির চ্যানেল খোলা হয়েছে সেই গুলো সঠিক আছে কি না সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে তদারকি করার দায়িত্ব সরকারের। বাস্তব মুখী পদক্ষেপ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করে নিজ বিভাগ, জেলা, থানায় দায়িত্ব দিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মূল রহস্য উন্মোচন করতে হবে। যদি তথাকথিত নিউজ পোর্টাল, টিভি চ্যানেলের দৌরাত্ম্যে বন্ধ করা না হয় তাহলে বস্তূনিস্ট সংবাদ গুলো মিথ্যের কাছে পরাজিত হয়ে যাবে এবং সৎ সাংবাদিকদের কষ্টের ফসল ডুবে যাবে হলুদ সাংবাদিকদের কারণেই। সৎ সাংবাদিকতার মনোভাবের অভাবে বর্তমানে যথেষ্ট মানক্ষুন হতে বসেছে পবিত্র পেশাদারিত্ব সাংবাদিকতা আর এর জন্য পুরাপুরি দায়ী নিবন্ধন বিহীন নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেল।
কিছু নামসর্বস্ব নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেলের প্রকাশক , সম্পাদক সমগ্ৰ বিভাগ, জেলা, উপজেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ প্রতিনিধি নিয়োগের মাধ্যমে চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক তৈরী করে নিজের ফায়দা হাসিল বেস্ত। এছাড়াও শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতিরা কার্ড সংগ্ৰহের জন্য সরাসরি অফিস আদালত সহ বনবিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন বিহীন নামসর্বস্ব নিউজ পোর্টাল ও টিভির সংবাদ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে প্রকৃত সাংবাদ কর্মীদের মানক্ষুন করে যাচ্ছে।
আমার এই প্রতিবেদন প্রকাশ শুধু তাদেরই জন্য যারা সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধা আঙুলি প্রদর্শন করে নিবন্ধদিত নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেলের অকাল ডেকে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টায় লিপ্ত। আমার লিখাটি কোন নিউজ পোর্টাল, টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নয় শুধু মাত্র সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধন পূর্বক তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বস্তূনিস্ট সংবাদ পরিবেশন ও সৎ সাংবাদিক নিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের বিকাশিত করে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত করা।