বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:হিন্দি সিনেমার অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতকে কেন ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তার সোজা সাপ্টা উত্তর দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কমান্ডো কভার দেওয়া নিয়ে।
সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যমৃত্যু নিয়ে মুম্বইতে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন স্বয়ং কঙ্গনা রানাওয়াত। ফলে তাঁকে মহারাষ্ট্রের প্রধান শাসক দল শিবসেনার রোষানলে পড়তে হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি নাকি মাদকাসক্ত। মুম্বইয়ে তাঁর অফিস ‘মণিকর্ণিকা’র নির্মাণকাজ বেআইনি ভাবে হচ্ছে বলে কাজ বন্ধের নোটিশ ধরিয়েছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। এ ছাড়া, তাঁকে নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। এমনকী, নিজের জন্য নিরাপত্তা চেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। সেই আর্জি শুনে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর জন্য ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
আর কঙ্গনাকে এই নিরাপত্তা দেওয়া নিয়েই সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে টুইট করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কেন তাঁকে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ভারতে কি পুলিশের সংখ্যা বেশি হয়ে গিয়েছে? তথ্য বলছে, ভারতে লক্ষ মানুষের ক্ষেত্রে পুলিশের সংখ্যার অনুপাত মাত্র ১৩৮ জন। তা হলে কেন এক বলিউড অভিনেত্রীকে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হবে? এ ভাবে নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যবহার করা ঠিক হল কিনা, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি জবাব দেবেন?’ এদিকে, মহুয়া মৈত্রর বক্তব্যকে সমর্থন করেন বেশ কিছু নেট ব্যবহারকারী। তার পরই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা টুইট করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। কঙ্গনা রানাউতের মতো হাইপ্রোফাইল অভিনেত্রীকে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার মধ্যে কোনও ভুল দেখছেন না তিনি। পরিষ্কার বলেছেন, ‘কঙ্গনা অত্যন্ত সত্যি কথা বলছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে যে ভাবে শিবসেনা এবং তাদের সমর্থকরা তোপ দাগছে, হুমকি দিচ্ছে। তাতে তাঁর ওই নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে।’ তার পরই তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন কমান্ডো কভার দেওয়া হচ্ছে? ভাইপোর এই নিরাপত্তা কি সত্যি কথাগুলো ঢাকার জন্য?’ বলা বাহুল্য, বাবুল সুপ্রিয়র এই প্রশ্নের জবাব মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মহুয়া মৈত্র বা তৃণমূলের তরফে দেওয়া হয়নি।
এদিকে, বাবুল সুপ্রিয়র সমর্থনে বিজেপি নেতারাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা মন্তব্য করেছেন, ‘প্রশান্ত কিশোর কে? বাংলায় তাঁর গুরুত্ব কী? তা হলে তাঁকে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল কেন?’ উল্লেখ্য, তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ভেবেছিল পশ্চিমবাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সিপিএম–সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলি সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। বিতর্ক এবং পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রাজ্যের তরফে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন প্রশান্ত কিশোর।