প্রত্যয় নিউজডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারি ভারতে বিপর্যয়কর এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দেশটিতে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করোনা লাগামহীন গতি এখন ভারতে; দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৬৯ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৬ হাজারের বেশি।
করোনা বিস্তারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে গত মার্চে জারিকৃত লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও দেশটির সরকার এখনও বেশ কিছু বিধি-নিষেধ অব্যাহত রেখেছে। আর এতে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কোটি কোটি মানুষ।
অনেকে কাজ হারিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরলেও পরিবারের সদস্যদের মুখে তিনবেলা খাবার তুলে দিতে পারছেন না। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন প্রান্তিক এলাকার কোটি কোটি মানুষ। কর্ম হারিয়ে পরিবারে ফেরা কোটি মানুষের চাপা কষ্ট, আর্তনাদ পৌঁছাচ্ছে না ক্ষমতাসীন সরকারের কাছেও।
পরিবারের সদস্যদের ভরন-পোষণের ব্যবস্থা করতে না পেরে প্রায়ই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকে। গত মার্চে লকডাউনের সময় কাজ হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসা এক দম্পতিও সেই পথ বেছে নিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে দেশটির একটি সংবাদমাধ্যম।
এতে বলা হয়েছে, পেটের ভাত জোগাতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরের নিমপুরা এলাকার এক দম্পতি। টাউন থানা এলাকার খড়গপুরের নিমাপুরায় শুক্রবার সকালের দিকে স্বামী স্ত্রীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে খড়গপুরে বসবাস করে আসছিলেন এবং সেখানেই কাজ করতেন তারা।
গত মার্চে করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকার যখন লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় তার কিছুদিন আগে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের পর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে খড়গপুরে আসেন এই দম্পতি। এরপরই শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই। কারণ করোনায় কাজ হারিয়ে ফেলেন স্বামী। অনেক কষ্টে সেখানে দিনাতিপাত করছিলেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ না থাকায় চরম অনটনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ওই দম্পতি। তবে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।