মানুষের জিবন খারাপ আর ভালো সময়ের চক্রাকার এক পথ । খারাপ সময় পেরিয়ে ভালো সময় উকি দেয় । তবে একই রকম কখনোই থাকে না ।মানব জিবন সমস্যাবহুল বলেই মানুষ খারাপ সময় নিয়ে চিন্তিত হয় , ভালো সময়ের পিছু ছুটতে শুরু করে । কখনো সে দৌড়ে এসে ভালো সময়ের ছায়ায় আশ্রয় খুঁজে পায় ,কখনো বা না পেয়ে দুশ্চিন্তার অমানিশার অন্ধকার ডুবে যায় ধীরে ধীরে । এই দুশ্চিন্তা চাইলেও আটকে রাখা যায় না , খুব সুক্ষভাবে গ্রাস করে ফেলে এক নিমিষেই ।
জীবনের সুস্থ সুন্দর গতিবিধি আর সর্বোপরি ভারসাম্য রক্ষার চিন্তার প্রয়োজন তবে সেটি অবশ্যই সুচিন্তা । দুশ্চিন্তা কে সুচিন্তা করতেই পারলে জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহমানতা বিরাজ মান থাকে ।তাই এটা জানা জরুরী যে কিভাবে দুশ্চিন্তা কে সুচিন্তা তে পরিণত করা যায় । আজ থাকছে কিছু টিপস যেভাবে দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেন :
১. সমস্যা বিশ্লেষণ :মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য হলো অকারণে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়া । তাই কোনো কিছু নিয়ে যখন খুব বেশি চিন্তা হয় তখন সেটিকে গভীরে প্রবেশ করতে না দিয়ে বিশ্লেষণ করুন । কি ,কেন এবং কিভাবে এই তিনটি প্রশ্ন নিজেকে করুন । প্রথমত নিজেকে জিজ্ঞেস করুন আপনার ভেতরে কি চলছে , কি নিয়ে চিন্তা হচ্ছে ।
দ্বিতীয়ত প্রশ্ন করুন কেনো এই দুশ্চিন্তা হচ্ছে ,এটার কারণ খুঁজে বের করুন । এরপর নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কিভাবে সেটা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারেন । কিছুক্ষণ ভাবলে আপনি নিজেই সেটার সমাধান খুঁজে পাবেন । তবে কিছু ক্ষেত্রে কিছু জিনিস ঘটবেই , যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ,সেটা নিয়ে অহেতুক চিন্তা না করে বরং এটার জন্যে প্রস্তুতি নিতে হবে কিভাবে এটা নিজেকে মানিয়ে নিবেন । তাহলেই দেখবেন দুশ্চিন্তা দূরে চলে গেছে ।
২.নিজেকে সময় দিন :মানুষ দুশ্চিন্তার কবলে পরে আত্মা এবং দেহের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে । যে মানুষ নিজেকে চিনেছে কিনা নিজের সম্পর্কে ওকিবহাল সে কখনো দুশ্চিন্তার কবলে পড়ে না । তাই নিজেকে চেনার জন্যে সময় দিন । নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিন আর নিজেকে নিজে বলুন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ,নিজেকে সাহস দিন । দেখবেন আপনি আগে থেকে অনেক ভালো অনুভব করছেন।
৩. মেডিটেশন শিখুন :মেডিটেশন একমাত্র পন্থা যেটা দুশ্চিন্তা কে সর্বদা নিয়ন্ত্রণ করার বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত পদ্ধতি ।
প্রতিদিন অবসর সময়ে কিছুক্ষণ মেডিটেশন করলে আপনার ভেতরে কসমিক শক্তির উদ্ভব ঘটবে এবং আপনি আপনার সব সমস্যা সমাধান করার জন্যে শক্তি অনুভব করবেন ।
৪. বিষাক্ত সঙ্গ এড়িয়ে চলুন :“সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে ” ছোটবেলার বইপত্রে এই প্রবাদ সীমাবদ্ধ থাকলেও বাস্তব জিবনে এর প্রভাব অনেক বেশি । অপ্রিয় সত্য হলো এই যে ভালো মানুষের চাইতে খারাপ মানুষের সঙ্গই বেশি । ভালো মানুষ কিংবা খারাপ মানুষ সেটা আপনাকেই বেছে নিতে পারবেন । যারা খারাপ মানুষ কিংবা যাদের চিন্তা চেতনা বিষাক্ত তাদের কথবার্তায় কিংবা কাজকর্মে তাদের বিষ আপনার ভেতরে প্রভাবিত হতে পারে । তাই বিষাক্ত সঙ্গ এড়িয়ে চলুন । ফলপ্রসূ সঙ্গ নির্বাচন করুন এতে আপনার মানসিক বৃদ্ধি ঘটবে !
৫.সময়মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খান:বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে খাদ্যাভ্যাস আমাদের মানসিক স্বাস্থের উপর প্রভাব ফেলে । আর ভালো খাবারের সঙ্গে মনের তৃপ্তির সংযোগ রয়েছে জন্মলগ্ন থেকেই । তাই স্বাস্থ্যকর খাবার এবং খাবারের সময়সূচি নির্ধারণ করুন ।