প্রত্যয় নিউজডেস্ক: কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বসানো ৫২টি অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে উচ্চ আদালতের দেয়া আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। গত ১ অক্টোবর উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের দেয়া নির্দেশনা পালনে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কউকের টিম সঙ্গে নিয়ে কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টের সেই ৫২ স্থাপনা উচ্ছেদে যান। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা মারমুখী অবস্থান নিয়ে উচ্ছেদে বাধা দেয়ায় প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টা করেও উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে বিকেলে ফিরে আসেন প্রশাসনের লোকজন।
বৃহস্পতিবার সকালে উচ্ছেদ হবে- এমন খবর পেয়ে বুধবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে সভা করে বৃহত্তর সুগন্ধা মার্কেট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি। সেখানে হুমকি দেয়া হয়- সাগরপাড়ের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করলে পুরো কক্সবাজার অচল করে দেয়া হবে।
উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ের পর তারা আবারও আদালতের আশ্রয় নেয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা মতেই কক্সবাজার পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বৃহত্তর সুগন্ধা মার্কেট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুর রহমানের নেতৃত্বে অবৈধ দোকান মালিকরা ভাড়া করে এনে সেখানে হাজারো লোকসমাগম করিয়ে বোল্ডোজারের সামনে অবস্থান করায় উচ্ছেদ কার্যকর হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মোক্তার জানান, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে দুপুর ১২টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টে যান প্রশাসনের লোকজন। সেখানে গিয়ে নিজেদের মূল্যবান মালামাল সরিয়ে নিতে দোকানদারদের ঘণ্টাখানেক সময় দেয়া হয়। অবশ্য এ বিষয়ে সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হয়।
তিনি বলেন, মালামাল সরিয়ে নিলেও জটলা পাকানোর কারণে প্রথমদিন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যায়নি। কিন্তু পরিচ্ছন্ন পর্যটনের স্বার্থে আমরা আদালতের রায় বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর।
জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল উচ্ছেদের নোটিশ দেয়। পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন একটি রিট আবেদন করেন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
গত ১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেন। ফলে ওই ৫২ ব্যক্তির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো বাধা নেই।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পরিকল্পিত পর্যটনের স্বার্থে কাজ করছে সরকার। সেই লক্ষ্যে সৈকতের কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টের ৫২টি অবৈধ স্থাপনাসহ যাবতীয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কাজ করছে প্রশাসন। উচ্চ আদালত ও আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। এ কাজে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও সহযোগিতা করছে।