প্রত্যয় ডেস্ক: বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উদ্ভাবিত ধান চাষ করে একই জমিত থেকে বছরে চার ফসল ঘরে তুলছেন ময়মনসিংহের কৃষকরা। আগাম জাতের আমন ধান বিনা-১১ ও ৭ ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। একই জমি থেকে বছরে চার ফসল ঘরে তুলতে পেরে দারুণ খুশি তারা। ময়মনসিংহ সদরের ঘাগড়া ভাটিপাড়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী চলতি আমন মৌসুমে ১৫৬ শতক জমিতে আবাদ করেছেন। এরমধ্যে ৫২ শতক জমিতে বিনা-১১ ও ৭ জাতের আমন ধানের আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে আমন পেকে গেছে। তা ঘরে তুলতে ব্যস্ত তিনি।
আইয়ুব আলী জানান, এ ধান চাষ করে তিনি একই জমি থেকে চারটি ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। সাধারণ জাতের আমন ধান না পাকলেও বিনা জাতের ধান কাটতে পারছেন। আগাম জাতের আমন ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাবেন। এরপর তিনি বিনা জাতের সরিষার আবাদ করবেন। সরিষা কেটে অল্প সময়ের জন্য ওই জমিতে পাট শাক করতে পারবেন। এভাবে একই জমিতে ৪ ফসল করে তারা লাভবান হচ্ছেন। একই এলাকার মতিউর রহমান জানান, আগে যে জমিতে ২ ফসলের বেশি আবাদ করা যেত না, সেখানে ৪টি ফসল করতে পারছেন। এই ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা তাদের বীজ, সারসহ কারিগরি সহায়তা করছেন।
বিনার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামীমা বেগম জানান, প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষককে একই জমিতে ৪টি ফসল করার ক্ষেত্রে বিনার প্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। স্বল্পকালীন আমন বিনা ১১ ও ৭ জাতের ধান আবাদের ফলে কৃষক দ্রুততম সময়ে আগাম জাতের ধান ঘর তুলতে পারছেন এবং এরপরই বিনার সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। এরপর কৃষক অল্প সময়ের জন্য বিনার পাটশাক আবাদ করে বাজারে বিক্রি করে আবারও বোরো আবাদ করতে পারছেন তারা।
বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম জানান, জাতিসংঘের উন্নত অভিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালকে সামনে রেখে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদন করতে বিনার বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে বিনার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা একই জমিতে ৪ ফসল ঘরে তুলছে। এরফলে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের আয় বেড়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৬৬ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ লাখ ৬৮হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। জেলা খামারবাড়ির ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মতিউজ্জামান জানান, মাঠে আগাম জাতের বিনার আমন ধান পাকতে শুরু করায় কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছে। আগাম জাতের ধান আবাদ করে কৃষকরা একদিকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে অপরদিকে একই জমিতে বছরে ৪টি ফসল করতে পারছেন।