প্রত্যয় ডেস্ক: সাইপ্রাসকে দুই ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এক ভাগ হবে গ্রিকপ্রধান দেশ, অন্যটি তুর্কিপ্রধান দেশ। রোববার বিতর্কিত সমুদ্রসৈকত ভারোশাতে প্রমোদ ভ্রমণে এরদোগান সাইপ্রাসকে দুই দেশে ভাগ করার ওই প্রস্তাব দেন। তিনি চান, গ্রিকভাষীদের প্রাধান্য যেখানে সেই দক্ষিণ সাইপ্রাস ও তুর্কিদের প্রাধান্যের উত্তর সাইপ্রাস আলাদা দেশ হোক। ১৯৭৪ সাল থেকে উত্তর সাইপ্রাস দখল করে আছে তুরস্ক। সেখানে তুরস্কপন্থী সরকার আছে। কিন্তু একমাত্র তুরস্ক ছাড়া আর কোনো দেশ উত্তর তুরস্ককে স্বীকৃতি দেয়নি।
সম্প্রতি সমুদ্রে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে তুরস্কের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তুরস্ক পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী জাহাজ পাঠায়। এই পরিস্থিতিতে ইইউ জানিয়েছে, বেআইনিভাবে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান করায় আগামী মাসে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। ১৯৭৪ সালে গ্রিসের সামরিক শাসকরা সাইপ্রাসে অভ্যুত্থান ঘটান। তার প্রতিক্রিয়ায় উত্তর সাইপ্রাস অভিযান চালায় তুরস্ক। জাতিসংঘ তাকে বেআইনি আখ্যা দিয়েছে। গ্রিস জানায়, তুরস্কের উদ্দেশ্য পুরো সাইপ্রাস দখল করে নেয়া।
১৯৮৩ সালের ১৫ নভেম্বর টার্কিশ রিপাবলিক অফ নর্দার্ন সাইপ্রাস (টিআরএনসি) গঠিত হয়। তার পরই ভারোশার ভোলবদল হয়। একদা যে সমুদ্রসৈকত ছিল বড়লোক ও বিখ্যাত লোকেদের অন্যতম পছন্দের জায়গা, তা ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়। বড় বড় বিলাসবহুল রিসোর্ট, হোটেল এখন ভেঙে পড়েছে। গত ৮ অক্টোবর তুরস্কের সেনা ভারোশাকে আংশিকভাবে খুলে দেয়। এই সিদ্ধান্ত নিয়েও আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
তুরস্কের উত্তর সাইপ্রাস অভিযানের ৩৭তম বার্ষিকীতে এরদোগানের প্রস্তাব, সাইপ্রাসে দুই ধরনের মানুষ বাস করেন। দুটি আলাদা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে। তাই সার্বভৌমত্ব ও সাম্যের ভিত্তিতে দুটি আলাদা দেশের আলোচনা শুরু হোক। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ওই প্রস্তাবের পর সাইপ্রাস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি তুরস্কের কোনো শ্রদ্ধা নেই। ইউরোপীয় নীতি ও মূল্যবোধও তারা মানে না।