ফ্রান্সে কৃষ্ণাঙ্গ এক সঙ্গীত প্রযোজককে নির্দয় মারধর এবং বর্ণবাদী আচরণের কারণে শুক্রবার আটক করা হয়েছে চার পুলিশ কর্মকর্তাকে। তাদের এমন বর্বরোচিত আচরণে ফুঁসে উঠেছে দেশটির সব মহল। মুখ খুলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জনপ্রিয় ফুটবলার, সঙ্গীতশিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও।
সম্প্রতি লুপসাইডার নামে একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ফরাসি পুলিশ কর্মকর্তারা মাইকেল জেকলার নামে ওই সঙ্গীত প্রযোজককে কয়েক মিনিট ধরে মারধর করছেন এবং বারবার বর্ণবাদী গালি দিচ্ছেন। গত সপ্তাহান্তে নিজের মিউজিক স্টুডিওতে প্রবেশের সময় নির্যাতনের শিকার হন জেকলার।
এধরনের বর্বর পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ফরাসি তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আন্তোনি গ্রিজম্যান। ফরাসি সঙ্গীত তারকা আয়া নাকামুরা গোপনে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এ ঘটনা ছিল ‘অগ্রহণযোগ্য আক্রমণ’। এটি ‘সবার জন্য লজ্জাজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফরাসি সরকারকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স কখনোই ঘৃণা বা বর্ণবাদের বিস্তার মেনে নেবে না।
লুপসাইডারে প্রকাশিত ভিডিও ধারণকারী এক স্থানীয় ব্যক্তি জানিয়েছেন, সাদা পোশাকে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা হাঁটুগেড়ে থাকা জেকলারের মুখে অন্তত সাতবার ঘুষি মারেন।
৪১ বছর বয়সী এ কৃষ্ণাঙ্গকে সহিংসতার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। তবে সেই অভিযোগ খারিজ করে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে এবং উল্টো পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
জেকলারকে নির্যাতনকারী চার পুলিশকে শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মিথ্যা সাক্ষ্য এবং সহিংসতার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন সরকারি কৌঁসুলীরা।
তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তিন পুলিশকে দলবদ্ধভাবে ‘বর্ণবাদী উদ্দেশ্য নিয়ে সহিংসতা’ এবং আরেকজনকে শুধু সহিংসতার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, এ চার পুলিশ কর্মকর্তা ফ্রান্সের গোটা নিরাপত্তা বাহিনীকেই কলঙ্কিত করেছেন।
সূত্র: আল জাজিরা