সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২০ অপরাহ্ন
বিশেষ সংবাদদাতা:
পশ্চিমবাংলা সরকার ও রাজ্যপালের সঙ্ঘাত থামছে না। কয়েকদিন ধরে রাজ্য ও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে চলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শনিবারও টুইটে তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনা করে রাজ্যপাল লেখেন, ‘কোভিড–১৯ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা বন্ধ করুন।’ প্রতিবাদে সমালোচনা করেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম। পালটা দিতে থেমে থাকেননি বিজেপিও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যপাল রাজ্যপালের মতোই কাজ করছেন। তাঁর সমালোচনা করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না।’ আর সন্ধ্যায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৩ পাতার কড়া চিঠি লেখেন রাজ্যপালকে।
এদিনের চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন যথেষ্ট আক্রমণাত্মক। তিনি লিখেছেন, ‘আপনি নজিরবিহীন ভাবে আমাকে আক্রমণ করে চিঠি লিখেছেন। আপনি ক্রমাগত আমাকে এবং আমার মন্ত্রীদের সমালোচনা করে চলেছেন। স্বাধীনতার পর দেশের আর কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল এ ভাবে কখনও সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেননি।’ পাশাপাশি তিনি চিঠিতে ইঙ্গিতবহ ভাবে এ কথাও জগদীপ ধনকড়কে বুঝিয়ে দেন যে, প্রশাসনিক ভাবে রাজ্য চালানোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের যে ক্ষমতা রয়েছে, তা রাজ্যপালের নেই। রাজ্যপাল দ্বৈত শাসনের স্বপ্ন দেখছেন বলেও চিঠিতে তিনি কটাক্ষ করেন। ১৭৭০ সালে বাংলায় দ্বৈত শাসনের পরিণাম ভালো হয়নি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এ কথাও রাজ্যপালকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি যে চিঠির জবাব দেবেন, তা তাঁর অজানা নেই। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও টুইট করে চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে এ কথাও স্পষ্ট বলেছেন, চিঠির জবাব অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে।
রাজ্যপাল–মুখ্যমন্ত্রীর এই সঙ্ঘাতে বিরক্ত কংগ্রেস ও সিপিএম। লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা মূল সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কী করে করোনার মোকাবিলা করা যাবে, সেই পথ না খুঁজে এখন নবান্ন ও রাজভবন ঝগড়া করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।’ এর পাশাপাশি সুজনবাবু রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ে গত ৪৮ ঘণ্টার তথ্য দিয়ে যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তার হিসেব যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। সরকারেরই দেওয়া বিভিন্ন তথ্য তুলনা করলে দেখা যাবে অনেক তথ্যই মিলছে না। আসলে তথ্য গোপন করতে করতে সরকারের বদহজম হয়ে গিয়েছে।’