নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরাসরি পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস নেয়ার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ ৭ শর্ত দেয়া হয়েছে। তবে সরাসরি ক্লাস অনলাইনেই হবে। এর আগে ২ নভেম্বর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাসের অনুমতি দেয়া হয়। রোববার সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে ইউজিসি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এটি সঞ্চালনা করেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। এতে সংস্থার সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক ড. আবু তাহের, সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক কামাল হোসেন যুক্ত ছিলেন। সভায় সম্প্রতি বিজ্ঞাপিত বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের সময় বৃদ্ধির জন্য সরকারি কর্মকমিশনকে (পিএসসি) চিঠি দিতে ইউজিসিকে অনুরোধ করেন ভিসিরা। ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষা নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিনস কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পরীক্ষার মান নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় কয়েকজন ভিসি জানান, অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত আছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে। পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেদের পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আলাদা করে নিচ্ছে। পরীক্ষা না হলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেয়া দরকার। এতে ইউজিসির অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) করোনার সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে ৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন।
এগুলো হচ্ছে- স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়া যাবে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত থাকতে হবে। মহামারী কোভিড-১৯ সংকটের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তা থেকে উত্তরণের জন্য এ সিদ্ধান্ত। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে। সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর ১ ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে। কোভিড-১৯ সংকটের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে হবে।