সবুজ পাতার ভেতরে বেগুনি রঙ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন সারিবদ্ধ ফুল ফুটে আছে। তবে এটা কোনো ফুল নয়। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে সারিবদ্ধভাবে ফুটে আছে শত শত রঙিন বাঁধাকপি। শীতকালের সবজিগুলোর মধ্যে বাঁধাকপি অন্যতম।
এটি গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজ, সাদা, লাল ও বেগুনিসহ বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এতদিন সবুজ রঙের বাঁধাকপি চাষ হলেও কিছু এলাকায় বেগুনি রঙের বাঁধাকপি চাষ শুরু হয়েছে। এবার প্রথম বারেরমত বেগুনি রঙের বাঁধাকপি চাষে হাসি ফুটেছে সাতক্ষীরার কৃষকদের মুখে।
জেলার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে চাষ হয়েছে বেগুনি রঙের এই বাঁধাকপি। সবজির চাষের জন্য বিখ্যাত সাতক্ষীরার এ অঞ্চলটিতে এবারই প্রথম নতুন জাতের এই সবজি চাষ করা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে এই এলাকার কয়েকজন কৃষক প্রায় ৫ বিঘা জমিতে বেগুনি বাঁধাকপির চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে সাধারণ বাঁধাকপির মতই। প্রয়োজন হয়নি আলাদা সার বা কীটনাশকের। নতুন রঙের বাঁধাকপির চাহিদা থাকায় বাজার দরও ভালো পেয়েছে কৃষকরা। প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। আগামীতে বেগুনি রঙের বাঁধাকপির চাষ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা।
স্থানীয় কৃষক শুভ হালদার জানান, এবার প্রথম তিনি এই জাতের বাঁধাকপি চাষ করেছি। যশোর থেকে রঙিন বাঁধাকপির বীজ কিনে এনেছিলাম। ১ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার টাকার বাঁধাকপি বিক্রি করেছি। বাজারে চাহিদা আছে। আগামী বছর আরও বেশি জমিতে চাষ করব।
আরেক কৃষক আকবার হোসেন জানান, তিনি প্রথমবার এই বাঁধাকপির চাষ করে বেশ সাড়া পেয়েছেন। সাধারণ বাঁধাকপির চেয়ে এই কপিতে বেশি দাম পেয়েছি। ঢাকার ব্যাপারিরা আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে এই রঙিন জাতের কপি কিনতে চেয়েছে।
ধানদিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার বলেন, এবছর কয়েকজন কৃষক বেগুনি রঙের বাঁধাকপি চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। বাজারে ভাল চাহিদা থাকায় আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে রঙিন জাতের এই বাঁধাকপির চাষ বাড়বে।
বেগুনি বাঁধাকপি যা লাল বাঁধাকপি হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে ভিটামিন এ, সি এবং কেসহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে। এতে রয়েছে মিনারেলস, পটাসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। সেই সাথে লাল বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে বেটা ক্যারোটিন যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।