প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার সোমবার (২২ মার্চ) থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হচ্ছে।
এই লেনদেন শুরুর আগে কোম্পানিটি ২০২০ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ের আর্থিক অবস্থা প্রকাশ করেছে। এই নয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়ে প্রায় সাড়ে ৬ গুণ হয়েছে।
কোম্পানিটির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) জানিয়েছে, ২০২০ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই নয় মাসে ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছে ১৪০ কোটি ৬৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে মোট মুনাফা হয় ২২ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৩৮ পয়সা।
এর মধ্যে ২০২০ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে মোট মুনাফা হয়েছে ১০৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে মোট মুনাফা হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১পয়সা।
ডিএসই জানিয়েছে, ‘এন’ গ্রুপে কোম্পানিটির লেনদেন কোড হবে “RBCBANK” এবং কোম্পানি কোড হবে ১১১৪৮।
ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনের বিষয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বরে বিএসইসির অনুমোদন পায় এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আইপিও আবেদন গ্রহণ করে ব্যাংকটি। ব্যাপক সাড়া পড়েছে। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের বরাদ্দের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি আবেদন করেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীরা এ আবেদন করেন।
ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ১২ কোটি সাধারণ শেয়ার ইস্যু করার জন্য আইপিও আবেদন গ্রহণ করে এনআরবিসি ব্যাংক। আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে ব্যাংকটি ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা।
১২০ কোটি টাকা শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৬০ শতাংশ বা ৭২ কোটি টাকা। বাকী ৪০ শতাংশ শেয়ার উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়েছে।
সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরির মধ্যে বাংলাদেশি সাধারণ জনগণের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪০ শতাংশ বা ৪৮ কোটি টাকা। এই ৪৮ কোটি টাকার শেয়ার পেতে আবেদন করেন ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৩০৩ জন। তাদের আবেদনের বিপরীতে জমা হয় ৫২১ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা তাদের জন্য বরাদ্দের ১০ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
বাংলাদেশি সাধারণ জণগণ, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে বরাদ্দকৃত ৭২ কোটি টাকার শেয়ার পেতে ৫৯৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা পড়ে। অর্থাৎ বরাদ্দের তুলনায় আবেদন পড়ে ৮ দশমিক ৩০ গুণ।
ব্যাংকটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড। ব্যাংকটির নিরীক্ষক হিসেবে রয়েছে কেএম হাসান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।