1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

সংক্রমণ রোধে নিষেধাজ্ঞা শুধু ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৪৩ Time View

প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক :

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিস্তার ঠেকাতে সাত দিনের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন ছিল সোমবার (৫ এপ্রিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা পালনে দেশজুড়েই ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। প্রায় ১১ ধরনের বিধি-নিষেধের মধ্যে বাস-মিনিবাস ছাড়া সবই কমবেশি চলেছে। বেশির ভাগ মার্কেট অবশ্য বন্ধ থাকলেও মার্কেট খোলার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে রাস্তায় মানুষজনের কমতি ছিল না। এমনকি অনেক মানুষের মাস্কও ছিল না। আর নিষেধাজ্ঞা মানাতেও সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কড়াকড়ি দেখা যায়নি।

নিষেধাজ্ঞা মেনে শুধু গণপরিবহনই বন্ধ ছিল। তবে রাস্তা ছিল অটোরিকশা ও রিকশার দখলে। অনেক দূরের পথও রিকশা চলতে দেখা গেছে। রাস্তায় প্রাইভেট কারও দেখা গেছে অসংখ্য। বিধি-নিষেধ মেনে বিভিন্ন মার্কেট বন্ধ থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মার্কেট খোলার দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের দিকে তাদের খুব একটা খেয়াল নেই। গণপরিবহন বন্ধ করে অফিস খোলা রাখা হয়েছে। এতে মানুষকে যে কোনোভাবেই হোক অফিসে যেতে হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন কোনো বালাই ছিল না। এতে যিনি রাস্তায় বেরিয়েছেন তিনিও ঝুঁকিতে পড়েছেন এবং বাড়ির লোকদেরও আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছেন।

বিধি-নিষেধ জারির পর রাজধানীসহ সারা দেশে কী পরিস্থিতি চলছে সে বিষয়ে খোঁজ রাখছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে বিধি-নিষেধ পালনে ঢিলেঢালা ভাবের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। আজ তো প্রথম দিন যাচ্ছে, আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। সরকারের নির্দেশনা সমন্বিতভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বিধি-নিষেধ মানেই হচ্ছে কিছু সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তাই সরকার বাধ্য হয়েই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনগণকে সুস্থ রাখাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য।

ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলার চিত্রও প্রায় একই। গণপরিবহন ও মার্কেট ছাড়া সব কিছুই ছিল খোলা। চট্টগ্রামে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও পিকআপ, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন সমানে চলেছে। এর বাইরে নগরজুড়ে কয়েক লাখ পেডাল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা অবাধে চলাচল করেছে। সেই সঙ্গে প্রধান সড়ক, উপসড়ক থেকে শুরু করে অলিগলির সর্বত্র ছিল মানুষের আনাগোনা।

সরকারের ১১ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল—সব সরকারি-বেসরকারি অফিসে শুধু জরুরি কাজে সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে আনা-নেওয়া। কিন্তু তা মানেনি বেসরকারি অফিসগুলো। তারা ঠিকই অফিস খোলা রেখেছে; কিন্তু কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেনি।

এতে সকালে অফিসে যেতে ও বাসায় ফিরতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয় কর্মীদের। রিকশা, হেঁটে, ভাড়ায় মোটরসাইকেলে, পিকআপ বা কয়েকজন মিলে প্রাইভেট কার ভাড়া করে অফিসে যেতে দেখা যায়। এতে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন পার করেছেন তাঁরা। এমনকি সব শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থাও করেননি কর্তৃপক্ষ।

আব্দুর রহিম পল্টনের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। বাসা কল্যানপুর। তিনি বলেন, ‘আগে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে নিশ্চিন্তে অফিসে যেতে পারতাম। কিন্তু কাল প্রথমে মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ফার্মগেটে রিকশায় গেছি। এরপর তিনজন মিলে একটি সিএনজি ঠিক করে মতিঝিলে পৌঁছেছি। খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়েছে।’

নিষেধাজ্ঞায় কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করার কথা ছিল। বাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের তা নিশ্চিত করার কথা ছিল। তবে গতকাল সকালে বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজারের চিত্র দেখা গেল আগের মতোই। মানুষের ভিড় ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা জায়গায় বাজার স্থাপনের কোনো উদ্যোগও ছিল না।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু অনেক এলাকায় তা মানতে দেখা গেল না। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের লোকজন যারা বাসার বাইরে খাবার খান, তারা হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসেই খাবার সেরে নেন। বিশেষ করে অলিগলির হোটেল চলেছে আগের মতোই।

শপিং মলসহ অন্য দোকানগুলো বন্ধ রাখার নিষেধাজ্ঞা বেশির ভাগই মানা হয়েছে। তবে মার্কেটের বাইরে কেউ কেউ কিছু সময়ের জন্য দোকান খোলেন। রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় দুপুরের দিকে মূল সড়কের পাশেই টাইলস, স্যানিটারি ও ইলেকট্রনিকসের বেশ কিছু দোকান খোলা দেখা যায়।

রাজধানীর মালিবাগে মৌচাক মার্কেট, টুইন টাওয়ার, শান্তিনগরে কর্ণফুলী সুপারমার্কেটসহ বড় শপিং মলগুলো বন্ধ ছিল। রাস্তায় রিকশার সংখ্যা বেশি থাকায় হঠাৎ হঠাৎ জটও লেগে যায়। রামপুরা, মালিবাগ, কাকরাইল, শান্তিনগর, মিরপুর এলাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় লোকজনকে বসে খেতে দেখা গেছে। শান্তিনগর ও মালিবাগের রেলগেট কাঁচাবাজারে ছিল ব্যাপক ভিড়। সেখানে মানুষজনকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেও কম দেখা গেছে।

গতকাল দুপুর ১২টায় গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে নিম্ন আয়ের, বিশেষ করে যারা মার্কেটে ও শপিং মলে কাজ করেন তারা গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য গাবতলীতে এসেছেন। তারা দীর্ঘক্ষণ বাস না পেয়ে ট্রাক, পিকআপ, অটোরিকশা ভাড়া করছেন। আবার কয়েকজনে মিলে প্রাইভেট কারও ভাড়া করছেন। আবার যেকোনো ধরনের যানবাহন ওই সড়কের সামনে এলে সবাই হুড়াহুড়ি করে ওঠার চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অবাধে সবর কিছু চলছে। লকডাউন হলেও মানুষ বাসাবাড়িতে থাকছে না। এতে করোনার সংক্রমণ আরো বেড়ে যেতে পারে।

রংপুরে প্রধান সড়কের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অন্যান্য সড়কের পাশের দোকান আংশিক খোলা রেখে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য মাইকিং করা হলেও অনেকেই তা আমলে নিচ্ছে না।

ময়মনসিংহেও অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব ছিল। হাট-বাজারগুলোতে বেশ ভিড় ছিল। অনেককে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। নগরে কমবেশি রিকশা চলাচল করেছে। তবে কোনো বাস চলাচল করেনি। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অন্য বাহনে আশেপাশের জেলায় যাতায়াত করেছে লোকজন। তবে বিপণিবিতান বন্ধ ছিল।

বগুড়ায় অপ্রয়োজনে রাস্তায় মানুষ ছিল। পাড়া-মহল্লায় আড্ডাও চলেছে। আবার ঘুরতে বের হয় অনেকে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধ মানছে না অনেকেই। কাঁচাবাজারে ছিল বেশ ভিড়।

চট্টগ্রামে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও নগরে পিকআপ, মাইক্রোবাস, টমটম, টেম্পোসহ অন্য সব যানবাহন চলাচল করেছে। গণপরিবহন না চলায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। অন্য সব গাড়ি চলতে পারলে বাস, মিনিবাস চলাচলে বাধা কোথায়? এমন প্রশ্ন অনেকেরই।

আরও পড়ুনমসজিদে ইফতার-সেহরির নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..