ডায়াবেটিস রোগীদেরকে একটি নির্দিষ্ট জীবনধারা অনুসরণ করতে হয়। খাদ্যতালিকা থেকে শরীরচর্চা সবকিছুই সময় মেনে অনুসরণ করার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ডায়াবেটিস।
তবে রোজার সময় খাবার ও ওষুধ গ্রহণের সময়সূচি পরিবর্তন হওয়ার কারণে অনেকের ডায়াবেটিস বেড়ে বা কমে যেতে পারে। এ ছাড়াও সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে ইফতারে বেশি খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতায় ডায়াবেটিস আরও বেড়ে যায়।
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো জানান, ‘রমজানে খাদ্যাভাসের সময়সূচি পরিবর্তনের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের ক্যালরি, রক্তে শর্করার পরিমাণ এবং ওষুধের মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতা দেখা দেয়। এতে করে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়তে পারে আবার কমে যেতে পারে।’
‘এর ফলে দেখা দিতে পারে হাইপোগ্লাইসিমিয়া (রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া) বা হাইপারগ্লাইসিমিয়া (রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়া)। সেইসঙ্গে হতে পারে কিটো আসিডোসিস বা হাইপার অসমোলার নন কিটোটিক ডায়াবেটিক কোমা (শরীরে কিটো অ্যাসিড বা অসমোলারিটি বেড়ে গিয়ে মারাত্নক অসুস্থ হয়ে পড়া বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া)।’
যেসব ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখা উচিত নয় জেনে নিন-
>> রোজা রাখার আগে ডায়াবেটিস রোগীদের জেনে নেওয়া উচিত; তাদের শরীর রোজা রাখার জন্য উপযুক্ত কি-না।
>> রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে অথবা বিগত ৩ মাসের মধ্যে যদি কোনো হাইপার বা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার বা কিটোঅ্যাসিডোসিসের ঘটনা ঘটে থাকে; তাহলে রোজা রাখা উচিত নয়।
>> ডায়াবেটিস ছাড়াও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন- লিভারের সমস্যা, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হলেও রোজা না রাখাই ভালো। এ তালিকায় অবশ্য গর্ভবতী ডায়াবেটিস রোগী ও ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন এমন রোগীরাও পড়বেন।
>> অন্যদের মধ্যে যারা কেবল খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমেই শর্করা নিয়ন্ত্রণ করছেন; তাদের জন্য রোজা রাখা সাধারণত নিরাপদ।
>> যারা ইনসুলিন বা ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে হবে। এ ছাড়াও নতুন করে ওষুধের মাত্রা ও সময় জেনে নিতে হবে।
>> যাদের অটোনমিক নিউরোপ্যাথি বা শরীরের ভিতরকার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু, যা হৃদযন্ত্র, অন্ত্র প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে তা বিকল আছে; তারাও রোজা রাখতে পারবেন না।
সূত্র: টনিক/মেডিভয়েস