প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : ভারতীয় স্ট্রেন ব্রিটেনে ধরা পড়েছিল আগেই। এ বার সেই স্ট্রেন মিউটেশন ঘটিয়ে আরও ভয়ানক হয়ে উঠেছে, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট তৈরি করেছে। ১ মে এমনটাই দাবি করল ব্রিটিশ প্রশাসন।
‘পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’ (পিএইচই) জানিয়েছে, ভারতীয় স্ট্রেন থেকে তৈরি হওয়া দু’টি নতুন ভ্যারিয়্যান্ট চিহ্নিত করা হয়েছে ইংল্যান্ডে। এ দু’টি আরও বেশি সংক্রামক। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ভারতে এখন দৈনিক সংক্রমণ গড়ে ৩ লক্ষ। নতুন স্ট্রেনের ধাক্কাতেই এই সংক্রমণ-বৃদ্ধি। ভারতেরই ছায়া এ বার ব্রিটেনে পড়বে কি না, সেই শঙ্কায় সরকার।
আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনে শ্রাবনী বসুর একটি প্রতিবেদনে পিএইচ’র বরাত দিয়ে বলা হয়, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট দু’টি মূল ভারতীয় স্ট্রেন, অর্থাৎ বি.১.৬১৭ থেকেই তৈরি হয়েছে। তবে দু’জনের আলাদা আলাদা মিউটেশন ঘটেছে। এদের সম্পর্কে আরও জানার জন্য তদন্ত করে দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা। বিশ্ব জুড়ে সদ্য খোঁজ পাওয়া এমন মিউটেটেড স্ট্রেনগুলিকে ‘ভ্যারিয়্যান্টস আন্ডার ইনভেস্টিগেশন’ (ভিইউআই) তালিকায় রাখা হয়েছে। মূল ভারতীয় স্ট্রেনটি, অর্থাৎ বি.১.৬১৭-ও এই তদন্তাধীন তালিকায় রয়েছে। কেন্ট স্ট্রেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেনকে ‘ভ্যারিয়্যান্টস আন্ডার কনসার্ন’ তালিকায় রাখা হয়েছে।
পিএইচই জানিয়েছে, ভারতীয় স্ট্রেনের নতুন ভ্যারিয়্যান্টের একটিতে আক্রান্ত হওয়ার ২০২টি ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। অন্যটিতে এ পর্যন্ত সংক্রমিত ৫ জন। মূল ভারতীয় স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। তবে এই ভ্যারিয়্যান্টগুলি বেশি ভয়ঙ্কর হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি এখনও পর্যন্ত। ২৪ ঘণ্টা নজরবন্দি রাখা হয়েছে আক্রান্তদের। ভ্যারিয়্যান্ট দু’টির গতিবিধিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মার্চ মাস থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পিএইচই। ভাইরাসের চরিত্র বোঝার জন্য গবেষণাও বাড়ানো হয়েছে।
মিউট্যান্ট স্ট্রেনে সংক্রমিতের তালিকাও বানানো হয়েছে গবেষণার সুবিধার জন্য। তাতে দেখা গিয়েছে ব্রিটেন স্ট্রেন বা কেন্ট স্ট্রেনে (বি.১.১.৭) সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৩৫। ভারতীয় স্ট্রেনে (বি.১.৬১৭) ইংল্যান্ডে আক্রান্ত ১৭২ জন। স্কটল্যান্ডে ১৩ জন। ৮ জন ওয়েলসে।
শনিবার ৩০ এপ্রিল ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যান হ্যানকক জানান, তাঁদের চিন্তা হচ্ছে মিউট্যান্ট স্ট্রেনগুলির ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হবে। ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার জনাথন ভ্যান-ট্যাম বলেন, ‘‘এটা বলা খুব কঠিন, ব্রিটেনে যে টিকাকরণ চলেছে, তা নতুন স্ট্রেন রুখতে কতটা কার্যকরী হবে। তবে এটুকু আশা রাখি, টিকার প্রভাবে রোগীর বাড়াবাড়ি হয়তো হবে না। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না।’’
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, ভারতের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। কী ভাবে দিল্লিকে সাহায্য করা যেতে পারে, ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা