ইটালির কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, রোববার বেশ কয়েকটি নৌকায় গাদাগাদি করে অন্তত ১২শ’ মানুষ লাম্পেদুসায় পৌঁছেছে৷ মাল্টার দক্ষিণে অবস্থিত ছোট্ট এই দ্বীপটি৷
টিউনিশিয়া এবং লিবিয়া দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের জন্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগ এই পথটি বেছে নেন৷
লাম্পেদুসার মেয়র সালভাতরে মারতেল্লো জানিয়েছেন, ভূ-মধ্যসাগরে অভিবাসন রুটগুলো আবার চালু হয়েছে৷ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরএআইকে তিনি জানান, ‘‘ভালো আবহাওয়ায় এই পথে আবারো আসতে শুরু করেছে অভিবাসীরা৷ তাই অভিবাসন ইস্যু নিয়ে আবারো আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন৷’’
প্রবেশে বাধা
ইটালির গণমাধ্যম জানিয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী অন্তত ৯টি নৌকা রোববার দ্বীপে পৌঁছেছে৷ একটি মাছধরা নৌকায় অন্তত চারশ’ মানুষ ছিলো, যারা বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন বয়সের৷ লাম্পেদুসার ৮ মাইল দূরে একটি নৌকাকে বাধা দেয় ইটালির পুলিশ৷ ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেই নৌকায় অন্তত ৩২৫ জন মানুষ ছিলো৷
এছাড়া ৯০ জন অভিবাসী বহনকারী আর একটি নৌকাকে দ্বীপে পৌঁছাতে বাধা দেয় পুলিশ৷ ইটালির টহলরত ট্যাক্স পুলিশ, যারা নৌপথে পাচার বন্ধে কাজ করে তারা আটক করেছিলো এই নৌকা দু’টি৷ অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্ধার অভিযানে ইটালি কর্তৃপক্ষের বাধা
যে সময় এই নৌকাগুলো দ্বীপে পৌঁছায়, সে সময় কোনো এনজিও বা মানবাধিকার সংগঠনের উদ্ধারকারী জাহাজ সেখানে উপস্থিত ছিলো না৷ জার্মানির মানবাধিকার সংস্থা সি ওয়াচের কর্মীরা সিসিলি দ্বীপে ইটালি কর্তৃপক্ষের হাতে অনেকটা আটক অবস্থায় আছে৷ তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে লাইফ জ্যাকেট ও উদ্ধার অভিযানের উপকরণ আছে, যা দিয়ে তারা অনেক মানুষকে উদ্ধার করতে পারে৷ সি ওয়াচের কর্মীদের অভিযোগ, তাদের উদ্ধারকারী জাহাজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে৷ জার্মান সংস্থা সি-আই এর উদ্ধারকারী জাহাজ আলান কুর্দির রবিবার লাম্পেদুসায় পৌঁছানোর কথা ছিলো৷
কঠিন এবং বিপজ্জনক পথ
উত্তর আফ্রিকা এবং ইটালির মধ্যে ভূ-মধ্যসাগরের রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক নৌপথ৷ এই বছরেই এই পথে ইউরোপে আসতে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ৷ ২০১৫ সাল থেকে অন্তত ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী এই পথে ইউরোপের বিভিন্ন উপকূলে পৌঁছেছেন৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই পথে অভিবাসীদের আসা কমলেও অন্তত ৬ হাজার মানুষ এ বছর এই পথে ইউরোপে এসেছেন৷
সূত্র : ডয়েচে ভেলে।