ওয়েব ডেস্ক: করজাল বাড়াতে প্রত্যেক নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শুক্রবার (২৮ মে) ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন। ওয়েবিনারটি আয়োজন করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনোমিক্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করজাল বাড়াতে ট্যাক্স পেয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। রাজস্ব বোর্ডের ২০১৯ সালের তথ্য বলছে- আমাদের টিন হোল্ডার মাত্র ৬০ লাখ আর ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয় মাত্র ২৪ লাখ মানুষ। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এজন্য আমার প্রস্তাব হচ্ছে- প্রত্যেক নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। যিনি ট্যাক্স দেয়ার যোগ্য হবেন, তিনি ট্যাক্স দেবেন কিন্তু সবাইকেই ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে। তাহলে করের আওতা বাড়বে। এত লক্ষ লক্ষ লোক পয়সাওয়ালা কিন্তু ট্যাক্স রিটার্ন দেয় মাত্র ২৪ লাখ লোক।’
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও সব লেনদেনের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিন বাধ্যতামূলক করতে হবে। ব্যক্তি হলে পরিচয়পত্রের অধীনে আর প্রতিষ্ঠান হলে টিনের অধীনে হবে। তাহলে সব কিছু ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের অধীনে চলে আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের কাজ চলার কারণে তার ব্যয় বাড়ছে। এবারের বাজেটে ৬৭৮টি প্রকল্পের মেয়াদ আবার বাড়াতে হয়েছে। এর মধ্যে কোনোটার মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালে, আবার কোনোটা ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পে এই মেয়াদ বৃদ্ধি বন্ধ করতেই হবে। প্রকল্প পরিচালকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
সাংবাদিক ফারুক মেহেদির সঞ্চালনায় এতে আরও যুক্ত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
শামসুল আলম বলেন, ‘কোভিডকালে দ্রুত প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নের কারণে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এসেছে। যে ধরনের খাদ্য সংকটের কথা জাতিসংঘ বলেছিল, সেটা হয়নি। জীবন বাঁচানো ও জীবিকা সৃষ্টি কীভাবে করা যায় সেটা মাথায় নিয়ে এবারের বাজেট করা হচ্ছে। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। স্বাস্থ্য খাতকে একটা খোলা চেক দেয়া আছে। যেটা তাদের প্রয়োজন, তাই তাদের দেয়া হবে, শুধু ব্যয় করতে পারলেই হলো।’
তিনি বলেন, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ভর্তুকি চালু থাকবে। কেননা কৃষি আমাদের যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছে। খাদ্য ঘাটতি তো হয়নি বরং মুদ্রাস্ফীতি সাড়ে ৫ শতাংশে রাখা গেছে।
তিনি বলেন, করজাল বৃদ্ধিতে কাজ করছে সরকার। টিকা নিশ্চিতকরণ এবং মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন এবার বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে।