ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের একটি কার্ড দেয়া হয় যেটা ব্যবহার করে প্রতি সপ্তাহে নিজেদের নিত্যদিনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা তারা তুলতে পারেন৷ এসপেন কার্ড নামের এই কার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সোডেক্সোর সঙ্গে হোম অফিস চুক্তি শেষ করে নতুন প্রতিষ্ঠান প্রিপেইড ফাইনেন্সিয়াল সার্ভিসেসের সঙ্গে চুক্তি করে৷ চুক্তি বদল একদিনের মধ্যে হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়েন আশ্রয়প্রার্থীরা৷
একাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার বরাতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, ডেবিট কার্ডগুলো কাজ না করায় বিশেষ করে পরিবার এবং সন্তানসহ বসবাস করা আশ্রয়প্রার্থীরা দিশেহারা অবস্থার মধ্যে পড়ে যান৷
সপ্তাহান্তে কার্ড বদল হওয়ার পর দেখা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনেকে নতুন কার্ড পাননি কিংবা যারা পেয়েছেন তাদের কারো কারো নতুন কার্ড চালু হয়নি৷ বাড়িতে থাকা একজন আশ্রয়প্রার্থী প্রতি সপ্তাহে কার্ডটি ব্যবহার করে ৩৯.৬৩ পাউন্ড তুলতে পারেন৷ তবে যারা হোটেলে থাকেন তাদের জন্য এই ভাতার পরিমান আট পাউন্ড করে৷ এই টাকা তুলতে না পারায় অনেক আশ্রয়প্রার্থীকে কয়েকদিন অসহায়ভাবে কাটাতে হয়েছে বলে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি পুরোপুরি এড়ানো যেতো যদি গত সপ্তাহান্তে চুক্তি বদলটি করার আগে পুরো প্রক্রিয়াটি একবার পরীক্ষা করে নেয়া হতো৷ হোম অফিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ দাতা সংস্থা মাইগ্রেন্ট হেল্প জানিয়েছে, টাকা তুলতে ব্যর্থ হওয়া অসংখ্য আশ্রয়প্রার্থী তাদের ফোন করেছেন৷ ফোনের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে লাইন পেতে অনেককে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে৷
বুধবার অবধি সাপ্তাহিক ভাতা তুলতে ব্যর্থ হওয়া এক আশ্রয়প্রার্থী জানিয়েছেন, কোন রকম তাজা ফলমূল বা শাকসবজি ছাড়াই সাধারণ খাবার খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের কেননা যে টাকা তাদের কাছে ছিল তা বাচ্চার ন্যাপকিন কিনতে খরচ হয়ে গিয়েছিল৷
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ৩১ বছর বয়সি এই ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমাদের খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছে৷ শুধু সন্তানের জন্য দরকারি কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস অবশিষ্ট আছে৷ তার জন্য রাখা সবজিগুলো আছে৷ আমি আর আমার বাগদত্তা শুধু রুটি আর পাস্তা খেয়ে দিন কাটাচ্ছি৷’’
বিপদে পড়া এরকম আরো ব্যক্তিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছে ব্রিটিশ পত্রিকাটি৷ অ্যাসাইলাম ম্যাটারস নামের একটি সংস্থার ক্যাম্পেইন ম্যানেজার ইমা ব্রিকস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আশ্রয়প্রার্থীদের যে এই কষ্ট এবং সংকটে পড়তে হতে পারে তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল এবং বিষয়টি পুরোপুরি এড়ানো যেতো৷’’
‘‘ব্রিটেনে হাজার হাজার অসহায় পরিবার এখন কয়েকদিন ধরে টাকার অভাবে খাবার ও অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারছে না,’’ যোগ করেন তিনি৷
এই বিষয়ে হোম অফিস এবং প্রিপেইড ফাইনেন্সিয়াল সার্ভিসেসের সঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷
সুত্র :ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট