বিশেষ সংবাদদাতা:সদর উপজেলার ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের চেঙ্গেরখাল নদীতে বালু বুঝাই নৌকা থেকে প্রতিদিন একটি চক্র প্রায় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। চক্রটি চাঁদা আদায়ের পর ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের চাঁদা রশিদ শ্রমিকদের দিচ্ছে। কিন্তু এই রশিদটি শ্রমিকদের শুধু নাম মাত্র দেওয়া হয়। এরচেয়ে বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে এই চক্রের যোগানদাতা সিলেটের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন। চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে নৌকা আটক করে দৈনিক তারা এই টাকা আদায় করছে বলে শ্রমিকদের জানায়।
জানা গেছে, গত ১৫ মে থেকে ইউনিয়নের টোকেরগাও এলাকার চেঙ্গেরখাল নদীতে নৌকা আটক করতে উৎ পেতে বসে থাকেন টিল্লাপাড়া গ্রামের সুরমান আলী, কছির আলী, মইন উদ্দিন ও সাইদুল ইসলামসহ আরো ১০/১২ জন লোক। যখনই একটি নৌকা নদীর পাড়ে আসে ঠিক ওই সময় তাদের দুইটি নৌকা নিয়ে গেরাও করে নৌ শ্রমিকদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করেন। মূলত নৌকাগুলো গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত নদী থেকে ইজারা টেক্স দিয়ে বালু বুঝাই করে থাকে। কিন্তু এই চক্রটি কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক ৩ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাম বলে টাকা আদায় করছে। অভিযোগ উঠেছে চক্রটি নৌকা শ্রমিকদের উপর জলুম করে এবং তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার। আর এসব চাঁদাবাজির নেপথ্যে রয়েছেন ওই এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অসহায় নৌকা শ্রমিক জানান, সামনে ঈদ পরিবারের সবাইকে খুশি করার জন্য নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে আসছি। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। এখানকার লোকজন খালি নৌকা নিয়ে উপরে যাতায়াতের সময় জোরপূর্বক টাকা আদায় করে। যদি তাদের টাকা দেওয়া না হয় তাহলে তারা আমাদের মারধর করে। বাধ্য হয়ে আমরা টাকা দিচ্ছি। টাকার পরিবর্তে তারা এটা রশিদ দিচ্ছে কিন্তু সেই রশিদে প্রকৃত আদায়কৃত টাকা পরিমান লিখছে না।
সূত্র জানায়, এই চক্রের সাথে ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেনের সাথে সম্পর্ক ভালো থাকায় তারা এমন বেপরোয়া ভাবে নৌ শ্রমিকদের উপর নির্যাতন করে টাকা আদায় করছে।
তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলেই মারপিট, নির্যাতনসহ মামলা হামলার ভয় দেখায়।
বিষয়ে জানতে ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্ঠা করলে তার ফোন ব্যস্থ পাওয়া যায়।
শাহজালাল এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সাইদুল ইসলাম চাঁদা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ইউনিয়নের চাঁদা নিচ্ছি। তবে বালু গোয়াইনঘাট উপজেলা থেকে উত্তোলন হয় আর ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের কেনো চাঁদা আদায় করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো সদোউত্তর দিতে পারেন নি।
এই চাঁদাবাজ বাহিনীর হাত থেকে নৌ শ্রমিকরা রক্ষা পেতে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করছেন।