বিশেষ প্রতিবেদন: শনিবার শেষ হল শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়াদ। শুক্রবার প্রশাসক বোর্ড গড়ার বিজ্ঞপ্তি দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু ওই পুরবোর্ডের মাথায় প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে রাখা হলেও ১২ সদস্যের বোর্ডে পাঁচজন তৃণমূল কাউন্সিলরকেও গুঁজে দেয় সরকার।
সেই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অশোকবাবু। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বোর্ডে পাঁচ তৃণমূল কাউন্সিলরকে রেখে রাজ্য সরকার দ্বিচারিতা করেছে। তিনি বলেছিলেন, ‘কলকাতা–সহ অন্য কয়েকটি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডে বিরোধী দলগুলির কোনও প্রতিনিধি সরকার রাখেনি। কিন্তু শিলিগুড়ির প্রশাসক বোর্ডে পাঁচজন তৃণমূলিকে গুঁজে দিয়েছে। রাজ্য সরকারের কৌশল কী, তা এ থেকেই বোঝা যায়।’ তিনি রাজ্য সরকারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, অশোকবাবুর প্রতিক্রিয়ায় চাপে পড়ে যায় রাজ্য সরকার। সাধারণ মানুষের কাছে সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা যে যাচ্ছে, তা পরিষ্কার হয়ে যায় সরকারের কাছেও। সেই সঙ্গে এখনই প্রশাসক বোর্ড গঠন করা না হলে আইনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে রাজ্য সরকার সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। রিভাইস অর্ডার পাওয়ার কথা অশোকবাবুও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নতুন বিজ্ঞপ্তিতে তৃণমূলের পাঁচ কাউন্সিলরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ ‘বাস্তবতা অনুভব করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করায়’ তিনি সরকারকে ধন্যবাদও জানান।
এদিকে, জলপাইগুড়ি পুরসভায় ঘটল ঠিক উল্টো ঘটনা। সেখানে বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসুকে বাদ দিয়েই প্রশাসক বোর্ড গড়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। তার পরই তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে মোহনবাবু বলেছেন, ‘আমি দলীয় চক্রান্তের শিকার হয়েছি। এই জেলায় তৃণমূলকে শেষ করে দেওয়ার জন্য তৃণমূলেরই কিছু নেতা প্রতি মুহূর্তে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। আমার মতো প্রকৃত তৃণমূলদের আর দলে জায়গা নেই।’ উল্লেখ্য, রবিবারই জলপাইগুড়ি পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে অন্য শহরগুলির মতো এখানেও পুরনির্বাচন স্থগিত রয়েছে। কিন্তু নিয়ম মেনে এখানেও প্রশাসক বোর্ড বসাতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।