ইটালিয়ান পত্রিকা ভিটা পাস্তোরালেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কো ইম্পালিয়াৎজো বলেন, ”রাজনৈতিক চাপানউতোর থেকে নিজেদের সরিয়ে আমাদের অভিবাসনের বিষয়টাকে বিবেচনা করা উচিত। এটাকে বাস্তবসম্মতভাবে একটা সম্পদ হিসাবে দেখা উচিত, সমস্যা হিসাবে নয়।”
তিনি বলেন, ”বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে, টিকাদানের গণতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে ইউরোপ কিন্তু এ বিষয়ে নতুন করে ভাবছে। আমরা যদি এই দেশের উদাহরণ নিয়েই ভাবি, তাহলে দেখতে পারবো যে ন্যায্য ও আইনসম্মত অভিবাসন কতটা অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বয়ে এনেছে। আমরা দেখবো যে, ইটালিয়ান সংস্থাগুলিতে ও অন্যান্য খাতে চাহিদা রয়েছে সেইসব মানুষের ও তাদের প্রতিভার, যারা এই দেশে কাজের খোঁজে এসেছেন।”
সান্ত’এগিদিয়ো যা চায়
ইম্পালিয়াৎজো জানান যে, আসন্ন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের বৈঠককে মাথায় রেখে বেশ কিছু প্রস্তাব তৈরি করেছে তার সংস্থা কমুনিতা দি সান্ত’এগিদিয়ো। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ”বৈধ অভিবাসন অবশ্যই আমাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। যেসব খাতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের চাহিদা রয়েছে, বা যেসব খাতে এমন চাহিদা হয়তো সেভাবে নেই, এই দুই খাতেই কর্মসংস্থান বাড়বে, বাড়বে উৎপাদন ক্ষমতা।”
ইটালিয়ান আইনে ব্যক্তিভিত্তিক পৃষ্ঠপোষকতার বা ইন্ডিভিজুয়াল স্পন্সরশিপ বিভাগে কর্মী আনতে বিশেষ নীতির দরকার, মনে করেন ইম্পালিয়াৎজো।তার মতে, ”এতে করে শুধু বেসরকারি সংগঠন নয়, লাভবান হবে সেই সব পরিবার ও সংস্থাও, যারা ইটালিতে বাইরের দেশ থেকে কর্মী আনাতে চান, ঠিক যেমনটা এর আগে ১৯৯৮ থেকে ২০০২ পর্যন্ত করা হতো।”
মানবতার পক্ষে যে সকল অভিবাসনের পথ
সান্ত’এগিদিয়োর প্রস্তাবগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইটালিতে অভিবাসনের জন্য ’হিউম্যানিটারিয়ান করিডোর’ বা মানবিক করিডোর চালু করা। ইম্পালিয়াৎজো বলেন, ”এই প্রস্তাবের মাধ্যমে আমরা বলছি, মানবিক করিডোরের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় বাড়ানো। এই পন্থা ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল, যার সাহায্যে তিন হাজার শরণার্থী এদেশে আসেন ও সাতশ শরণার্থীকে পাঠানো হয় ফ্রান্স, বেলজিয়াম, অ্যান্ডোরা ও সান মারিনোতে।”
এই ধরনের করিডোরগুলি মূলত বেশ কিছু গির্জা বা ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল। এই ধরনের পন্থা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় যে ’অবৈধ অভিবাসনের চক্রের বিরুদ্ধে লড়া সম্ভব। এভাবেই অভ্যর্থনা ও সমাজে অন্তর্ভুক্তির পথ বের করা সম্ভব।’
ইম্পালিয়াৎজো বলেন, ”ইউরোপের যে স্বপ্ন আমাদের সবার মনে রয়েছে, তার সাথে মিলিয়েই এই মানবিক করিডোরের পরিকল্পনা, যেখানে একসাথে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সহমর্মিতা হাতে হাত ধরে কাজ করে। এখানে আমরা শুধু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলছি না, মাথায় রাখছি অর্থনৈতিক দিকও।”