বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
ত্রাণের দাবিতে অবশেষে পথে নামলেন মানুষ। করলেন রাস্তা অবরোধ। পুলিশ বোঝাতে গেলে শুরু হল বচসা। তা থেকে ক্রমে তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। রীতিমতো জনতা–পুলিশ সঙ্ঘর্ষ বাধে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন বলে খবর। একজন পুলিশের মাথা ফেটেছে বলেও জানা গিয়েছে। বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়ার জোড়া অশ্বত্থতলার ঘটনা।
বুধবার সকালে বসিরহাট–বনগাঁ রোডের জোড়া অশ্বততলায় জড়ো হন দাসপাড়া ও কাহারপাড়ার কয়েকশো গ্রামবাসী। ত্রাণের দাবিতে থালা হতে রাস্তা অবরোধ করেন। নিজেদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই সেখানে আন্দোলন করছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁরা। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে এমন বিক্ষোভের কথা শুনে ছুটে আসে বাদুড়িয়া থানার পুলিশ। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, টিভিতে, খবরের কাগজে সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে ত্রাণের কথা বলছে। অথচ লকডাউন মেনে নিজেদের গৃহবন্দি রাখার পর এতদিন কেটে গেলেও তাঁরা কেউই ত্রাণ পাননি। রাজনৈতিক কারণে তাঁদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। তাই ত্রাণের দাবিতে তাঁরা পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
তখন পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দিতে চাইলে গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা তখন ইটবৃষ্টি করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কয়েকজন গ্রামবাসী জখম হয়েছেন বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। অন্যদিকে, ৪ জন পুলিশও আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। একজনের মাথাও ফেটে যায়। তার পর বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্রের নেতৃত্বে বসিরহাট, মাটিয়া ও বাদুড়িয়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার পেছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে কিনা, তা–ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তবে ঘটনার পরই রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সরাসরি আঙুল তুলেছে বিজেপির দিকে। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, ‘স্থানীয় এক বিজেপি নেতার উসকানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।’ যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাদের পালটা অভিযোগ, ‘ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করছে তৃণমূল। এই ঘটনা মানুষের স্বাভাবিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’ এলাকায় পরিস্থিতি এখনও থমথমে। মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।