আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সমগ্র বিশ্ব আজ করোনায় আক্রান্ত। চীনের পরপরই দেশটির বিশেষায়িত অঞ্চল হংকংয়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্তু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ আর কঠোরভাবে তা প্রয়োগের কারণে হংকংয়ে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। অঞ্চলটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৬ জন। মারা গেছেন মাত্র চারজন।
হংকংয়ে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২৩ জানুয়ারি। এরপরই করোনা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয় হংকং কর্তৃপক্ষ। কাজে লাগায় সার্স মোকাবিলার অভিজ্ঞতা।
২০০৩ সালে চীনের পর সার্সের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল হংকং। তাই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই মেনে নেয় হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষদের চলাচলের ওপর নানা বিধিনিষেধ দেওয়ার পাশাপশি, বিভিন্ন শহর থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত- সব স্থানে প্রবেশের আগে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। মাস্ক ও জীবাণুনাশক ব্যবহারের ওপর সর্বোচ্চ জোর দেওয়া হয়। বন্ধ ঘোষণা করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ পদক্ষেপের পরও মার্চের মাঝামাঝিতে হংকংয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে থাকে। এরপরই নতুন করে আরো কিছু পদক্ষেপ নেয় হংকং। চীনের সঙ্গে থাকা ১৪টি বর্ডার পয়েন্টের প্রায় সবগুলোই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব পদক্ষেপ নিতে সাধারণ মানুষই সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। হংকংয়ে চীনা নাগরিকদের প্রবেশ বন্ধে ধর্মঘট পর্যন্ত করে হংকংয়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
স্থানীয় একজন বলেন, প্রথম থেকে আমরা চীনা পাসপোর্টধারীদের হংকংয়ে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছিলাম। সেইসঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করতেও কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। আশা করি আমরা এর সুফল পাবো। একইসঙ্গে চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা মানুষদের করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি কোয়ারিন্টিন নিশ্চিত করার জন্য, তা আইনে পরিণত করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় পর্যটকদের হংকং ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হলেও পরবর্তীতে নিষিদ্ধ করে অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ মানুষের আন্তরিকতা এবং কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপের কারণেই চীন ঘেষা হংকং করোনার ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই মুক্ত। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে হংকংয়ে এক হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও, মৃতের সংখ্যা এখনো দুই ডিজিটে পৌঁছায়নি।
দৈনিক প্রত্যয়/জেডএম