কলকাতা সংবাদদাতা:করোনা আবহেও পশ্চিমবাংলায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের পালা চলছেই। আর সেই আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি ফের সরগরম হয়ে উঠেছে। রবিবার নাম না করে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ‘ক্রিমিনাল’ বলে উল্লেখ করেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই আক্রমণ মুখ বুজে হজম করে যাননি অনুব্রত। তিনিও পাল্টা তোপ দাগেন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। বলেন, ‘কে এলো আর গেল, তা নিয়ে আমার বয়েই গেল। পালে গরু–ছাগল অনেকই আসে, চড়ে বেড়ায় এবং শেষে চলেও যায়।’
উল্লেখ্য, বিজেপি ফের সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে। শুক্রবার কলকাতায় রাজ্য বিজেপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে ছিলেন মুকুল রায়, রাহুল সিনহার মতো নেতারাও। তাঁরা সকলেই জানান, এই কর্মসূচির সূচনা হবে ১০ অগস্ট সোমবার। এবার তাঁদের লক্ষ্য, বাংলায় ৩ কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহ করা। এই উপলক্ষে রবিবার প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো তোপ দাগেন রাজ্যের প্রধান শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বীরভূমে বিজেপির পর নেতা ও কর্মীর মৃত্যুর জন্য তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। পরিষ্কার বলেন, ‘আমরা হিংসার রাজনীতি করি না। করলে এখানে অন্য দলগুলির কোনও নেতাই থাকতেন না।’ এর পরই তিনি বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করে আক্রমণ করেন। বলেন, ‘বীরভূমে তৃণমূলকে যে নেতা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি আসলে একজন ক্রিমিনাল।’
বিজেপি নেতার এমন সরাসরি নজিরবিহীন আক্রমণে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও কলকাতার তৃণমূল নেতারা সরাসরি বিজেপি নেতার ওই আক্রমণের জবাব দেননি। কিন্তু চুপ করে থাকেননি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল স্বয়ং। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় একেবারে চাঁছাছোলা ভাষায় বলেন, ‘অনেককেই তো এখানে আসতে আর যেতে দেখলাম। তাই কে এল, আর কে চলে গেল, তাতে আমার কিছুই এসে–যায় না। তাই এ সব কথা নিয়ে আমি কিছুই বলব না।’ যদিও তিনি তার পর অনেক কিছুই বলেন। অবশ্য তিনিও কারও নাম করেননি। বলেন, ‘পালে কি একটা গরু থাকে? পালে গরু–ছাগল অনেকই আসে, চড়ে বেড়ায় এবং শেষে চলেও যায়। তাতে আমার বয়েই গেল।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এ ভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে বীরভূমের রাজনীতি ফের তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।