মঙ্গলবার বেলজিয়ামের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারের চাপে থাকার কথা উড়িয়ে দেন। কিন্তু অস্বস্তি যে রয়েছে, তা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।
সংবাদসংস্থা আরটিবিএফ-কে সোশালিস্ট পার্টির নেতা পল মাগনেট বলেন, ”আমার মনে হয় না সরকার কোনো সংকটের মুখোমুখি।”
কিন্তু অন্যদিকে, গ্রিন পার্টির সহসভাপতি জ-মার্ক নোলে বলেন, ”আমরা আরেকটা সংকট ডেকে আনতে পারি না।”
২৩ মে থেকে সাড়ে চারশ অভিবাসনপ্রত্যাশী বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের একটি গির্জা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে অনশনে রয়েছেন। সরকারের কাছে তাদের দাবি- দেশে থাকার অনুমতি দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বেলজিয়ামের উপ-রাষ্ট্রপতি পিয়ের-ইভ ডেরমানিয়ে জানান যে, যদি একজন মানুষও এই অনশনে বসে প্রাণ হারান, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সাতদলীয় জোট সরকারের পতন হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অনড় অবস্থান সব পক্ষের
সারা বিশ্বের নজরে এখন বেলজিয়াম, যেখানে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক অনশনরতদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতিসংঘসহ বহু মানবাধিকার সংগঠন ও সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশ। কিন্তু বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট অবস্থান, এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের থাকার অনুমতি ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়।
শুধু উপ-রাষ্ট্রপতিই নন, বেলজিয়ামের বামপন্থি রাজনীতিকরাও সোমবার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার পাশাপাশি দেশে রাজনৈতিক আবেদন ও অভিবাসন প্রক্রিয়ার পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখেন।
বর্তমানে, অনশনরত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনেকেরই শারীরিক ও মানসিক অবস্থা নাজুক। কিন্তু তা-ও অবস্থান থেকে সরছেন না তারা।
৪১ বছর বয়সি তারিক ২০১৩ থেকে বেলজিয়ামে বাস করছেন৷ তিনি পলিটিকোকে বলেন, ‘‘এই অনশনই আমাদের শেষ তুরুপের তাস। আমি আর নিতে পারছি না। আমাদের ১২ কিলোগ্রাম ওজন কমেছে, দুবার কিডনিতে ইনফেকশন হয়েছে।”
তারিক জানান, এর আগে সব ধরনের পন্থায় সরকারের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে তার মতো আরো কয়েকশ অভিবাসনপ্রত্যাশী। তিনি বলেন, ”আমরা চাই যে সরকার এই অব্যবস্থার দায় নিক ও আমাদের সমস্যার সমাধান করুক। তাদের কাছে ক্ষমতা আছে, পন্থা আছে। সৎ সাহস দেখানোর প্রয়োজন শুধু।”
(রয়টার্স)