রাঙামাটি প্রতিনিধি: ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন সামনে রেখে রাঙামাটিসহ পাহাড়ে নিরাপত্তাবাহিনীর চলমান অভিযান জোরদারসহ নির্বাচনি এলাকায় অস্থায়ী সেনাক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবিটি জানিয়েছেন জেলা নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থোপন করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। এ সময় সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন, রুহুল আমিন, চিংকিউ রোয়াজা, সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বরসহ জেলা আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দীপংকর তালুকদার বলেন, সারা দেশের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বরের নির্বাচনে রাঙামাটির বিলাইছড়ি, কাপ্তাই এবং বরকল উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পাহাড়ের কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর প্রচন্ড অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচার ও আক্রমণে আমাদের বহু নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। নির্বাচন এলে বরাবরই তাদের তৎপরতা বেড়ে যায়। চলমান ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বেড়ে গেছে। ১৬ অক্টোবর কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের খুন ও জখম করে চলেছে তারা।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনি এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়িয়েছে অবৈধ অস্ত্রধারীরা। প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে তারা। এর উদ্দেশ্য, তাদের সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীদের জোর করে জেতানো। এজন্য আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় প্রার্থীদের টার্গেট করে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনকে জোর করে তাদের অনুকূলে নিয়ে যেতে তাদের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিতভাবে ব্যাহত হবে। অবৈধ অস্ত্রধারীদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করা না গেলে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। এতে সন্ত্রাসীরা আরও উৎসাহী হয়ে আগামী সব নির্বাচনে আগের মতোই পন্থা প্রয়োগ করে জণগনকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। ব্যাহত হবে গণতন্ত্র।
দীপংকর তালুকদার আরও বলেন, নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে পাহাড়ে গত দু’য়েক বছর যাবত সন্ত্রাসীদের তৎপরতা সংকুচিত হয়ে আসে। কিন্তু নির্বাচন সামনে রেখে হঠাৎ তাদের তৎপরতা আবার বেড়ে গেছে। তারা তাদের সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীদের জেতাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাই আসন্ন ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে পাহাড়ের প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর চলমান অভিযান আরও জোরদার করার আহবান জানান দীপংকর তালুকদার। আসন্ন ইউপি নির্বাচনের প্রত্যেক ধাপের আগে ভোট কেন্দ্রসহ নির্বাচনি এলাকায়গুলোতে অস্থায়ীভাবে সেনাক্যাম্প স্থাপনের দাবি তোলে সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান তিনি।