বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:বিজেপির অভ্যন্তরে তাঁকে নিয়ে যতই বিতর্ক থাক না কেন, রাজ্য সভাপতি হিসেবে নিজের কাজ করে যেতে বদ্ধপরিকর দিলীপ ঘোষ। তাই শুরু করে দিয়েছেন নয়া কর্মসূচি। নাম ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে দিলীপদা’। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখতেই এই কর্মসূচি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির পাল্টা ‘দাদা’। মানে দিলীপদা। এবার তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই কর্মসূচির পোস্টার এবং ভিডিও প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইঙ্গিতবহ বার্তাও দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করা হয়নি সেখানে। মাত্র দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সেই বার্তায়। তা হল ‘সততার প্রতীক’। উল্লেখ্য, এই ‘সততার প্রতীক’ শব্দদুটি আগে ব্যবহার করা হত তৃণমূলের প্রচারে। তৃণমূল নেত্রীর বিশাল ছবির নীচে লেখা থাকত এই শব্দদুটি।
বিজেপির তরফে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষিত এই কর্মসূচিতে রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যে কোনও ধরনের দুর্নীতির কথা জানা থাকলে সাধারণ মানুষ অভিযোগ জানাতে পারেন। অভিযোগ জানানোর জন্য একটি হেল্প লাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। নম্বরটি হল ৭০৪৪০ ৭০৪৪০। অভিযোগ জানানো যেতে পারে ই–মেলেও। সেইজন্য একটি মেল আইডি–ও দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘সোম থেকে শুক্রবার এই অভিযোগ জানানো যাবে।’ তিনি নিজে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনার জন্য থাকবেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে এই অভিযোগ জানানো যাবে। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
’ইউ টিউবে এই কর্মসূচির ভিডিও আপলোড করা হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও সেই ভিডিও বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। সেই বার্তায় আমফানে ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির যে সব অভিযোগ উঠেছিল, তার উল্লেখ রয়েছে। শুধু তাই নয়, আগের চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথাও রয়েছে সেই বার্তায়। পাশাপাশি, সেই কেলেঙ্কারিতে যে শাসক দলের নেতারা জড়িয়ে রয়েছেন, তা–ও পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই প্রচার–কাঠামো তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন স্বয়ং রাজ্য সভাপতি। বিষয়টি তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি।
প্রতিক্রিয়া জানায়নি তৃণমূলও। কেউ কেউ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বলেছেন, বিজেপির নিজেদের ব্যাপার এটি। তারা কী করবে, তা তাদের বিষয়। এ নিয়ে তৃণমূলের কোনও মাথাব্যথা নেই। কেউ কেউ অবশ্য সরাসরি কিছু না বললেও ইঙ্গিতে কটাক্ষও করেছেন। বলেছেন, যাঁদের ঘনিষ্ঠরাই দুর্নীতির সাগরে ডুবে রয়েছেন, তাঁরা কী করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইছেন? তবে একটি বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে তৃণমূল। দলের তরফে বলা হয়েছে, তৃণমূল যথেষ্ট স্বচ্ছ দল। তাদের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অভিযোগ করা হলে মানুষ মেনে নেবে না।