নিজস্ব প্রতিবেদক: সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সদ্য বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। একটি সূত্র জানায় এই অবৈধ সম্পদের পরিমাণ আনুমাানিক ৩ কোটি টাকার উপরে। জিজ্ঞাসাবাদে সম্পদের বৈধ উৎস দেখাতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করতে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের বাইরে অর্থ পাচারেরও খোঁজ করছে দুদক।
মানুষকে ক্রসফায়ারের ভয়, ঘুষ বাণিজ্য, দখলবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। এসব অভিযোগে ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের চট্টগ্রাম কার্যলয় অনুসন্ধান শুরু করেছিল। তবে তা এক সময় ঝিমিয়ে পড়ে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় প্রদীপ দাশ গ্রেফতার হওয়ার পর নতুন করে তথ্য তালাশ শুরু করে দুদক।
জানা যায়, অনুসন্ধান শুরুর পর উপ-পরিচালক মাহাবুব আলম সম্পদ বিবরণীর তথ্য-উপাত্ত চেয়ে নোটিশ দেয় প্রদীপ কুমার দাশকে। সম্পদ বিবরণীতে দেখা যায়- নিজের নামে সামান্য কিছু সম্পদ করলেও বেশির ভাগই করেছেন স্ত্রী চুমকি দাশের নামে। কক্সবাজার উত্তরণ আবাসিক এলাকায় ৮ শতক প্লট, এফডিআর ১২ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ১৫ লাখ টাকা, প্রভিডেন্ট ফ্যান্ড ২৫ লাখ টাকা, স্বর্ণ ৩০ ভরি, শর্টগান ও পিস্তল আছে।
এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের পাথর ঘাটায় ৬ তলা বাড়ি, চট্রগ্রামের ১৬ শহরে ১২ শতকের প্ল্যাট, কক্সবাজার কলাতলী হেরিটেজ হোটেলে ৭৪০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, বেসিক ব্যাংকের চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের শাখায় ১৪ লাখ টাকার ডিপিএস। তবে, ওসি প্রদীপ নিজের নামে ৭০ লাখ টাকার মতো সম্পদ দেখিয়েছেন। আর স্ত্রী চুমকী দাশের নামে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তার স্ত্রীকে মৎস্য ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করেন।
দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর বড় একটি অংশের বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি প্রদীপ দম্পত্তি। এমনকি দাখিল করা বিবরণীর বাইরেও অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। অবৈধ সম্পদের অর্জনের অভিযোগে প্রদীপ ও তার স্ত্রীকে আসামী করে মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।
এছাড়া ভারতের আগরতলা ও অস্ট্রোলিয়ায় অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। যা নিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে সংস্থাটি।