বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভে গ্রেফতারের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সংকলিত তথ্যে বিষয়টি জানা গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, প্রতিদিন বিক্ষোভ নতুন নতুন শহরে যেমন ছড়িয়েছে তেমনি বেড়েছে গ্রেফতার হওয়া মানুষের সংখ্যা। বিক্ষোভ দমনে পুলিশের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক এবং কারফিউ জারি থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতারের ক্ষমতাও বেড়ে যায়। এপির তথ্য অনুসারে, সবচেয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলসে। এরপর রয়েছে নিউ ইয়র্ক, ডালাস ও ফিলাডেলফিয়া। গ্রেফতারকৃত বেশিরভাগের বিরুদ্ধে কারফিউ ভঙ্গ ও পুলিশের নির্দেশ মতো বিক্ষোভস্থল ছেড়ে না যাওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। কয়েকশর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সপ্তাহে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে রাজনীতিকরা দাবি করে আসছেন, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষরা বহিরাগত বা অন্য অঙ্গরাজ্যের। মিনেসোটার গভর্নর দাবি করেছেন, ৮০ শতাংশ বিক্ষোভকারী অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা নন। তবে মিনিয়াপলিসে গ্রেফতারকৃত মানুষের সংখ্যা তাদের এ দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। শনিবার রাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ৫২ জনের ড্রাইভিং লাইন্সেস রয়েছে। হেনেপিন কাউন্টি শেরিফ এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানীতে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হওয়া চার শতাধিক মানুষের ৮৬ শতাংশ ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ার।
গ্রেফতারকৃত কতজনকে বন্দি করে রাখা হয়েছে তা জানায়নি এপি। করোনাভাইরাস মহামারি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের অনেক সময় জিপ-টাই পরিয়ে বসিয়ে রাখতে বা বাসে করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। ২৫ মে থেকে বিক্ষোভে গ্রেফতার হওয়া তিন সহস্রাধিক মানুষকে সহযোগিতার জন্য লস অ্যাঞ্জেলসে ২০ লাখ ডলারের তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে অনলাইনে প্রচারণার মাধ্যমে।
জড়িত পুলিশদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ গঠন : জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ঘোষণা করা হয়েছে। ফ্লয়েডকে চেপে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া অপর তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার নতুন অভিযোগ আনা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিসে হত্যার শিকার হন জর্জ ফ্লয়েড। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন মোট ৪ পুলিশ সদস্য। ওই ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া এই চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ঘোষণা করে মিনেসোটার অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন বলেছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ অভিযোগ ঘোষণা করা হয়েছে। ডেরেক চাওভিনের সঙ্গে বরখাস্ত হওয়া অপর তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন থমাস লেন, জে অ্যালেক্সান্ডার কুয়েন এবং তো থাও। কেইথ এলিসন বলেন, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা কঠিন হবে। তিনি বলেন, ‘বিচারে জয় পাওয়া কঠিন হবে। ইতিহাস বলছে এতে চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত মিনেসোটায় বেসামরিক নাগরিক হত্যার দায়ে কেবলমাত্র একজন পুলিশ কর্মকর্তাই দণ্ডিত হয়েছেন।