আবহাওয়া: বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। ইয়েমেন সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ‘মোখা’। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে রোববার (৭ মে) একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা পরবর্তীতে ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানলে ১১ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে আঘাত হানবে। সেক্ষেত্রে এটি খুবই শক্তিশালী ঝড় হিসেবে আঘাত করবে। এর গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।
আর ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূল দিয়ে যায় তাহলে সেটি আঘাত করবে ১৩ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে। সেক্ষেত্রেও এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই আঘাত হানবে। তবে গতি কিছুটা কমে ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন দেওয়া হয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এক কফির নামে? তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিভিন্ন দেশ। যেমন এর আগে উপকূলে আঘাত হানা ‘সিত্রাং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। তেমনই ‘মোখা’ নামটি দিয়েছে ইয়েমেন।
যদিও ‘মোখা’ শব্দের আক্ষরিক কোনো অর্থ নেই। ইয়েমেনের বন্দর শহর ‘মোখা’র নামে ঘূর্ণিঝড়ের এই নামকরণ করা হয়েছে।
১৯ শতক পর্যন্ত মোখা ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। এই শহর থেকেই সারা বিশ্বে বিখ্যাত কফি ‘মোখা’ রপ্তানি করা হতো। কফির নামকরণও হয়েছে শহরের নামেই। বহু বছর ধরে মোখা বন্দর দিয়ে দেশবিদেশে ‘মোখা’ কফি রপ্তানি করা হতো।
বুধবার পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে পার্থক্য কমে এসেছে। এসময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র স্থলভাগে আঘাতের সময় প্রায় একদিন এগিয়ে এসেছে। তবে দুটি মডেলের মধ্যে স্থলভাগে আঘাতের সময়ের পার্থক্য ১৮ ঘণ্টা রয়েছে এখন, যা প্রতিদিন কমতে থাকবে সামনের দিনগুলোতে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দুটি মডেলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে পার্থক্য কমে এসেছে তা হলো ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের ওপর দিয়ে ও আমেরিকার মডেল অনুসারে উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে ১২ মে দুপুর ১২টার পর থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের ওপর দিয়ে ও আমেরিকান মডেল অনুসারে ১৩ মে দুপুর ১২টার পর থেকে স্থলভাগে উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।