নিজস্ব প্রতিবেদক: অপরাধ না করেও দুর্নীতি দমন কমিশনের ২৬ মামলায় প্রায় ৩ বছর কারাভোগ করা পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এই টাকা দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শেষ মামলাটি অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন আদালত। গত বছরের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’, শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন আদালত।

পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা উপস্থাপন করেন। পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। পরে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার বিষয়টি রায় ঘোষণার জন্য কার্যতালিকায় ছিল। ওই দিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর বিচারপতি এফ আর নাজমুল আহসান জানতে চান, আসল আসামি আবু সালেক এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন? দুদকের আইনজীবী তখন বলেন, ‘আশা করি সে ধরাছোঁয়ার মধ্যে আসবে। শুনেছি সে ভারতে চলে গেছে। তবে সীমান্তে জানানো আছে। ভারতেও জানানো আছে। কোভিডের কারণে কিছু দেরি হয়েছে। আশা করি ধরাছোঁয়ার মধ্যে আসবে।’