টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: ঝুঁকি নিয়ে গতকালও কর্মস্থলে ফিরতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পিকআপ, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে যায়। সেতু দিয়ে ২২ হাজার গাড়ি পারাপার হয়েছে। এতে গতকাল শনিবার সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার অধিক।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্য ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সবমিলে পারাপার হয়েছে ২২ হাজারের অধিক গাড়ি। এর মধ্যে মাইক্রো-প্রাইভেটকার আট হাজার, মোটরসাইকেল সাত হাজার এবং পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট ছোট ট্রাক পারাপার হয়েছে ৭ হাজার। সরেজমিনে দেখে গেছে, শত শত মানুষ কর্মস্থলে যেতে ভিড় করছেন। এ ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে মানুষজন কর্মস্থলে পৌঁছাতে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রো ও পিকআপে করে যাচ্ছে। এর মধ্যে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে অনেককে যেতে দেখা গেছে। অন্যদিকে মহাসড়কে অনুমোদনহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। কেউ মানেনি সামাজিক দূরত্ব। গাদাগাদি করে পিকআপ, মাইক্রোতে যাচ্ছেন তারা। তবে মহাসড়কের ভূঞাপুর লিংকরোডে হাইওয়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ করে। ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে করে যাওয়া মানুষজনকে নামিয়ে দেওয়া হয় পথিমধ্যেই।
শনিবারও গণপরিবহন বন্ধ ছিল। চাকরি বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে চরম বিপাকে পড়েন তারা। এ ছাড়া বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তি তো রয়েছেই। যে যেমন পারছেন অসহায় মানুষজনের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর উদ্দেশে বের হন ফরহাদ হোসেন নামের এক গার্মেন্টকর্মী। অপেক্ষায় আছেন কম ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে। তাতে তার সময় কেটে যায় দুই ঘণ্টা। ততক্ষণে কোনো যান পাননি তিনি। এ সময় তিনি বলেন, ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরছি। যে টাকা হাতে ছিল সেটা বাড়িতেই খরচ হয়ে গেছে। অন্যের কাছ থেকে ধার-দেনা করে অল্প টাকা নিয়ে বের হয়েছি কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে এসে দেখি অনেক বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এত টাকা আমার কাছে নেই।
কর্মস্থলে যেতে অপেক্ষারত অনেকেই বলেন, ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী বহন করায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় নিয়েই জীবন-জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। যেকোনো মাধ্যমেই হোক কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। নইলে চাকরি টেকানো খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ঝুঁকি নিয়ে কম ভাড়ায় পিকআপে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। অনেকেই দুজনে মিলে একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে যাচ্ছেন।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন জানান, শনিবার সকাল থেকেই মহাসড়কে ছোট ছোট যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ ছাড়াও টাঙ্গাইলের আশপাশের জেলার মানুষজন এই মহাসড়ক ব্যবহার কর্মস্থলে যাচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। তবে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মহাসড়কের ভূঞাপুর লিংঙ্করোড এলাকায় চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে।