মরক্কো ও আলজেরিয়ার মতো দেশ থেকে আসা কয়েকশ অনিবন্ধিত কর্মী ও অভিবাসনপ্রত্যাশী গত দুই মাস ধরে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনশন অবস্থানে বসেছিলেন। তাদের দাবি, নিয়মিত অভিবাসীদের মতো সুবিধা তাদের দিতে হবে। দিতে হবে দেশে থাকার অনুমতি।
প্রথমে কর্তৃপক্ষ এই দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও বৃহস্পতিবার তারা জানায় যে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে থাকতে দেবে তারা।
অনশনকারী অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কর্তৃপক্ষের সাথে এবিষয়ে আলোচনা স্থাপনে চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা বিফল হলে অনশনের পন্থা বেছে নেয় তারা।
এতদিন গণমাধ্যম ও জনগণের মধ্যে অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তার আলোচনা উঠে আসছিল। অবশেষে, প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার দে ক্রু অনশন থামানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। ক্রুর দল লিবারেল পার্টির নেতা এগবের্ট লাশায়ের্ট বলেন যে অনশনকারীদের আবেদনগুলি একে একে বিবেচিত হবে ও এক্ষেত্রে কোনো গোষ্ঠীর ওপর চাপ দেওয়া হবে না বা কাউকে ঝুঁকিতে ফেলা যাবে না।
সরকারের তরফে এই ঘোষণা আসার পর বেলজিয়ামের সেন্ট জন গির্জা হাততালির শব্দে ফেটে পড়ে। অসুস্থ ও দুর্বল অনশনকারীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এখনও স্পষ্ট নয় যে সব অনশনকারীরা সরকারের এই ‘অস্পষ্ট আশ্বাসে’ খুশি কি না। ফলে, গির্জা থেকে অবস্থান উঠে গেলে ব্রাসেলসের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা অনশনকারীরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
অভিবাসন ও বেলজিয়াম
অভিবাসন বিষয়ক ষ্টেট সেক্রেটারি সামি মাহদি টুইট করে বলেন, “অবশেষে আমি নিশ্চিন্ত। আমি জানতাম যে এই লড়াই মানুষের বিরুদ্ধে নয়, ছিল নীতির বিরুদ্ধে।”
এর আগে, মাহদি বলেন যে তাঁর মতে অনশোনকারীদের প্রত্যেককে আলাদা করে থাকার অনুমতির জন্য আবেদন করা উচিত। তিনি বলেন যে, মিলিতভাবে একটা গোষ্ঠীকে থাকার অনুমতি দেবার প্রশ্নই ওঠেনা।
এক কোটি ১৫ লাখ জনসংখ্যার দেশ বেলজিয়ামে অনথিভুক্ত অভিবাসনপ্রত্যাশী আছেন প্রায় দেড় লাখ। বেশিরভাগ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ভয় কাজ করে যে আশ্রয়ের আবেদন করতে গেলে হয়তো দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ।
আলজেরিয়া ও মরক্কোর মতো দেশকে স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে দেখে বেলজিয়াম। ফলে, প্রত্যর্পণের সম্ভাবনা বেশি থাকায় তা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চিন্তিত করে তোলে। এই অনশন বেলজিয়ামের সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও নাড়া দেয়। রাজনৈতিক মহলে আলোচিত হয়ে ওঠে বেলজিয়ামের অভিবাসন নীতি।
সুত্র :ইনফোমাইগ্রেন্টস