আব্দুল্লাহ আল সানি:ধর্মপাশা সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলাায় হাওরে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত দুইদিন ধরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে করোনার প্রভাবে এবার শ্রমিক সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা্য় রয়েছেন এখানকার কৃষকেরা ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩১হাজার ৭২০হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ উপজেলার ৩০০০হেক্টর বোরো জমির ধান কাটা হয়েছে। এখানকার হাওরের বোরো ধান কর্তন করতে পাবনা,ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী জেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান কাটার শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে এ উপজেলায় আসেন। কয়েকদিন ধরে তাঁরা আসতে শুরু করেছেন । কিন্ত করোনাকালীন সময়ে নানাবিদ সমস্যার কারণে বেশির ভাগ শ্রমিকই এখনো এ উপজেলায় এসে পৌঁছাতে পারেননি।
উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের দয়ালপুর গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া(৪৫) বলেন, আমি এইবছর ১২হাল ( ১হাল=১২কিয়ার,১কিয়ার=৩২শতক) জমিত বোরো ধানের আবাদ করছি। জমিত ধান ভালা অইছে। সামান্য কিছু জমির ধান কাটছি। করোনার ভয়ে এই বছর এলাহায় ভাগালু (ধান কাটার শ্রমিক) খুউব কম আইছে । যানবাহন চলাচল ব্ন্ধ ও লকডাউনের কারণে ভাগালুরা সহজে আমরার এলাহায় আইতে হারতাছে না । হেরা না আইতে হারলে এইহানকার কৃষকরার ১২ডা বাইজ্জা যাইব।এরা আউনের লাইগ্যা সরহারের তরফ থাইক্যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করণ দরহার।
উপজেলার মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলা উদ্দিন বলেন, আমি নিজেও কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। বোয়ালা হাওরে আমার জমি রয়েছে। এ উপজেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান কাটার শ্রমিকেরা এসে ধান কেটে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে জমিতে ধান কাটা এবং তাঁরা নিরাপদ দূরত্ব রেখে যাতে রাত্রি যাপন করতে পারেন এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নতুবা ভয়াবহ কিছু একটা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাজমুল ইসলাম বলেন, ধান কাটার শ্রমিকের কেনোরকম সঙ্কট তৈরি না হলে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫মের মধ্যে এখানকার আবাদকৃত বোরো জমির ধান কাটা শেষ করা সম্ভব হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু তালেব প্রথম আলোকে বলেন, রোববার বিকেল পাঁচটা থেকে এ উপজেলায় লক ডাউন চলছে।উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্ঠা করা হচ্ছে রিকশা চালক,মোটরবাইক চালক সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষজনকে যানবাহন চালানো বন্ধ রেখে হাওরে গিয়ে ধান কর্তন করতে বলা হচ্ছে। ধান কাটলে ত্রাণও দেওয়া হবে।এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ উপজেলায় যাতে ধান কাটার শ্রমিকেরা সহজেই আসতে পারেন সে বিষয়টিকেও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।##
১৬.০৪.২০২০