প্রত্যয় ডেস্ক: শরিক অন্য দেশগুলোর কড়া বিরোধিতা সত্ত্বেও পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী নীলনদের অববাহিকায় গ্র্যান্ড রেনেসাঁ ড্যাম বা জিইআরডি নামের একটি বাঁধ নির্মাণ করছে ইথিওপিয়া। সুদান বলছে, এই বাঁধের কারণে নীলনদের পানির স্তর কমে গেছে। যে কোনো পক্ষের একতরফা পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে দেশটি।
বাঁধটির নির্মাণ নিয়ে বিতর্কের শুরু হয় ২০১১ সালে। বাঁধটি নির্মাণের শুরু থেকেই মিসর এর কড়া বিরোধিতা করে আসছে। নীলনদের পানির স্তর কেন নিচে নেমেছে মিসর ইথিওপিয়ার কাছ থেকে দ্রুত এর আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা চেয়েছে। নীলনদের স্রোত যেদিকে প্রবাহিত হচ্ছে, সেই দিকে মিসর ও সুদানের অবস্থান।
ইথিওপিয়ায় বাঁধ নির্মাণের ফলে মিসর ও সুদানে পানির সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে দেশ দুটির সরকার। এদিকে ইথিওপিয়া হাইড্রোইলেকট্রিক এই বাঁধকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছে।
ইথিওপিয়ার পানি মন্ত্রী সেলেশি বেকেল নিশ্চিত করেছেন স্যাটেলাইট ইমেজ দেখা যাচ্ছে, বাঁধের পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, বাঁধের স্বাভাবিক নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। দুদিন আগে বিষয়টি নিয়ে তিন দেশের মধ্যে আলোচনা সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
কয়েক বছর ধরে বাঁধটি নিয়ে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। আলোচনার বিষয় বাঁধের জলাশয় কখন ও কীভাবে পূরণ করতে হবে এবং কতটা জল ছাড়তে হবে সে বিষয় নিয়ে। কিন্তু অনেক আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে দেশগুলো।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ সৌকরি এর আগে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘অববাহিকায় থাকা দেশগুলোর জনস্বার্থ বিবেচনায় কোনো চুক্তি ছাড়াই যদি বাঁধের পানি আটকানো হলে সেটা উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে এবং সংকট ও সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে, যা ইতোমধ্যে অস্থির অঞ্চলটিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।’
মিসর ইথিওপিয়া উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ হিসেবে পরিচিত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে এই সংঘাত নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়াশিংটন তাতে ব্যর্থ হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যদি দেশ দুটির মধ্যে কোনোভাবে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সূত্রপাত হয় তাহলে কোটি কোটি বেসামরিক মানুষ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।