1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

পল্লব কান্তি পালের লেখনীতে ছোটগল্প **তার কথা**

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২০৬ Time View

         তার কথা
                      পল্লব কান্তি পাল

আজ যার কথা বলব তার সাথে সমাজের চোখে সম্পর্ক কেবল বন্ধুত্বের। কিন্তু ক্যাম্পাস জীবনে অনেকের কাছে আমাদের অকথিত সম্পর্কটা মুখরোচক চাটনি। তার কথা বলার ইচ্ছা আমার ছিল না।কিন্তু করোনার এই দিনে তারই চিন্তায় কেন ডুবে থাকি সেটা ভাবছি দিন- রাত।মনকে কি ভারাক্রান্ত বলবেন নাকি তৃষ্ণার্ত?ছাদের এই ছোট ঘরে ভ্যাপসা গরমে তার কথা ভাবছি।শুনছেন তো আমার কথা? একবার ভাবছিলাম কি দরকার আপনাদের এই কথা বলার?পরক্ষণে দাপুটে মনে বাঁধ দিতে পারলাম না।

তার নাম তিলোত্তমা। নামটা শুনে হয়ত অনেকের মনে রূপের স্তুতি করার বাসনা জেগে উঠবে।কিন্তু যারা শ্যামোজ্জ্বলকে কালো ভাবেন এবং দৈহিক বর্ণই যাদের কাছে রূপের আধার তাদেরকে বাসনার অহংকারটুকু ডুবাই হবে।বিধাতা তাকে প্রথম দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন মাওয়া লন্ঞঘাটে।তখন এডমিশন টেস্টের জন্য ঢাকা যাচ্ছিলাম আমি।তখনও তার নিরভিমান চাহনীর সাথে সৃষ্টি কর্তা পরিচয় না করিয়ে দিলেও দোষ দিতে পারিনি আমি।কিন্তু শত অচেনা লোকের মধ্যে যে তার মুখটা মনে লুকানো ছিল তার পরিচয় আমি প্রথম দেখার দিন পেয়েছিলাম।তার সাথে পরিচয়ের সুতোটা এগিয়েছিল ভার্সিটি লাইফের ২য় দিন। ডিপার্টমেন্টের নিচে প্রথম দৃষ্টি বিনিময়ের সময় তার দইয়ের মত কোমল নিরভিমান চাহনীর সাথে পরিচয় ঘটে। রবি ঠাকুর লিখেছিলেন ” রূপ দিয়ে ভুলাব না তোমায়,ভালোবাসা দিয়ে ভুলাব।” কিন্তু চাহনী দিয়ে ভুলানো কি রূপ দিয়ে নাকি ভালোবাসা দিয়ে?
তার কানে বাঙালি রীতিতে গড়া দুল আমার নজর এড়িয়ে যায় নি সেদিন।

পরিচয় আপনি থেকে তুমিতে নামতে সময় লাগে নি।তুমি থেকে ” তুই” তে নামার প্রস্তাবটা আমি করেছিলাম।
সবার সাথে মিশুকে মেয়েটা আমার মত ঘরকুনো ব্যাঙের সমান ছেলের সাথে ঘনিষ্ঠতা রাখতে ভোলেনি।তাই তার সাথে পাশাপাশি চলার সৌভাগ্য সর্বদা না হলেও ফেসবুকের চ্যাটলিস্টে তার নাম ওপরের দিকে না থেকে পারত না।কি কথা হত?আমার মত রবীন্দ্রপ্রেমী যে তাকে গীতবিতান প্রেমী করে তুলেছিল সেটা হয়ত স্বাভাবিক। এখন হয়ত বলবপন গীতবিতানের গানগুলো চিঠি হিসেবে ব্যাবহার করতাম আমি।কিন্তু উত্তর তো আসে নি।সত্যি কি আসে নি?
যে ঘটনাটা বলব সেটা ঘটার সময় আমার দেহের শিরায় শিরায় বৈদ্যুতিক তরঙ্গ খেলে গিয়েছিল।

একদিন সে ফেসবুকে শুধালো ” একটা কথা জিজ্ঞেস করব?”
আমি উত্তর করলাম ” অবশ্যই। ”
” আমি তোর কে হই?”
না ভেবে উত্তর দিয়েছিলাম ” বন্ধু। ”
ওপারে তার তখনকার মুখ দেখার বাসনা পূরণ হয় নি আমার।
তবুও তার মেসেজ এসেছিল ” আর একটু ভেবে বল।”
আমি দ্বিধায় পড়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম ” তুই রাগ করবি না তো?”
” সেটা বলতে পারব না।”
আমি ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম ” কথা দে রাগ করবি না।”
উত্তর এসেছিল ” কথা দিতে পারব না।”
এই সময় দুই দিক থেকে দুই হিমালয় আমার মনে আঘাত করছিল।
উত্তর দিয়েছিলাম ” ভালো বন্ধু। ”
এই উত্তর দিয়ে কাকে হত্যা করেছিলাম আমি?আমার অনুভূতিকে না তার চাওয়াকে?হয়ত বলবেন ভীরুদের কোন অনুভূতি থাকে না।তাহলে কি একাত্তরে যে সাহসী যোদ্ধা তার বন্ধুর লাশ দেখেও যুদ্ধে মত্ত ছিল তার অনুভূতিকে সম্মান করবেন আপনারা? হয়ত বলবেন নিজের চিন্তায় এতটাই মগ্ন যে আমি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন করে বিরক্ত করছি আপনাদের।

” এটা ছিল না।যেটা ছিল সেটা বললি না তুই।” তার মনের এই আকুতির কথা জানতে পেরে আমি ছুটে গিয়েছিলাম আকাশ দেখতে।কিন্তু জ্যোছনা ধোঁয়া আকাশটা আমার মনকে শান্ত করার ক্ষমতা নিয়ে সৃষ্টি হয় নি।
ঘণ্টাখানিক পর ফেসবুকে একটা মেসেজ দেখেছিলাম ” সলিড মেকানিক্সের চার অধ্যায়ের কয়টা ম্যাথ করেছিস?”
এই ঘটনা বর্ণনা করার পর অন্য শত ঘটনা বর্ণনা করতে পারব না আমি।এর পরেও কথা হত আমাদের । তবে গীতবিতান চর্চা হয় নি আমাদের মাঝে।
এরপরেও তার সাথে বাসে বাড়ি এসেছি আমি। রাতে বাসের ভিতর অল্প আলোয় আমার মাথা তার ঘাড়ে রাখতে গিয়েও পারিনি আমি।সে ও কি মাথা রাখতে চেয়েছিল আমার ঘাড়ে?

করোনার ছুটিতে বাড়ি এসে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ” তাকে নক করব না আমি।”
প্রথমে শপথ রাখতে ভুল করিনি আমি।এটা কি আমার ধর্মভীরুতা নাকি আমার প্রতি তার অনুরক্তাতা পরীক্ষা?

সে একদিন ফেসবুকে নক দিয়ে বলে ” কি ব্যাপার? কোন খবর নিস না যে।”
এরপরে আমাদের কথা চলপ।আমিও নক দিই।এখন যদি আমাকে শপথ ভঙ্গকারী বলেন তবে আপনাদের দোষ দিব না।
কিন্তু আর কোনদিন গীতবিতান চর্চা হবে না।এমনকি তার জানতে চাওয়া সম্পর্কে টা অপ্রকাশিত থেকে যাবে।নাকি প্রকাশ হবে?

লেখক : পল্লব কান্তি পাল
শিক্ষার্থী, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..