প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। অবশ্য ফল ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা।
মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুর পর্যন্ত চলমান সহিংসতায় ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তবে নিহতদের মধ্যে তৃণমূল বা বিজেপির কর্মী সমর্থক কতজন রয়েছেন সেটা এখনো জানা যায়নি।
নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার আগুনে পুড়ছে রাজনৈতিক দলগুলোর একের পর এক কার্যালয়। আবার মৃতদের বেশিরভাগই বিজেপির কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেছে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে পরাজিত এই দলটি। এই অবস্থায় সহিংসতা পরিহার করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভি জানিয়েছে, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছেন মমতা। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসা এই মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেছিলেন, সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে। করোনা মহামারির সময় মানুষের পাশে থাকতে হবে। শান্ত থাকুন, অভিযোগ থাকলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। শান্তি-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুলিশের। বিজেপি, কেন্দ্রীয় বাহিনী যদিও অনেক অত্যাচার করেছে।
এ দিকে মঙ্গলবারই পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজেপি নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলার’ অভিযোগে নেতাকর্মীদের নিয়ে বুধবার (৫ মে) ধর্নায় বসবেন তিনি। এছাড়া রাজ্যের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন নাড্ডা। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে আক্রমণ প্রতিহত করা যায় তা নিয়েই তিনি মূলত রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় টার্গেট করা হচ্ছে বিরোধীদের। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৭টিতে।
বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে তৃতীয় দফায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে শপথ অনুষ্ঠানে অতিথির সংখ্যাও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। তারপর ৬ ও ৭ মে শপথ নেবেন বিধানসভা নির্বাচনের নবনির্বাচিত বিধায়করা।